রোজভ্যালি কেলেঙ্কারির বাজেয়াপ্ত সম্পত্তি থেকে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার দায়িত্বে থাকা অ্যাসেট ডিসপোজাল কমিটির (এডিসি) বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগের ফরেনসিক অডিট নিয়ে তীব্র টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক কেন্দ্রীয় সংস্থা সরে দাঁড়ানোর পর এবার অডিট করতে অস্বীকার করল রাজ্যের অর্থ দপ্তরও। এই পরিস্থিতিতে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) চিটফান্ড সংক্রান্ত বিশেষ বেঞ্চ।
রাজ্য কেন অডিট করতে অপারগ?
মঙ্গলবার বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য সরকার লিখিতভাবে তাদের অপারগতার কথা জানায়।
রাজ্যের দাবি: রাজ্যের অর্থ দপ্তর জানিয়েছে, তাদের কাছে এই ধরনের ফরেনসিক অডিট করার মতো পরিকাঠামো বা দক্ষ কর্মী নেই। তাই তারা এই দায়িত্ব নিতে পারবে না।
অডিট প্রশ্নে ফের চাপে হাই কোর্ট
এডিসি কমিটির আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগে ফরেনসিক অডিট নিয়ে আদালত কার্যত অচলাবস্থার মুখে পড়েছে। এর আগে:
প্রথমে সেবি (SEBI) অডিট করতে অপারগতা প্রকাশ করে।
এরপর ২৫ নভেম্বর ক্যাগ (CAG) কয়েক সপ্তাহের টালবাহানার পর লিখিতভাবে জানিয়ে দেয়, তারাও এই ফরেনসিক অডিট করতে অপারগ।
এই পরিস্থিতিতে আদালত চাইছিল দায়িত্বটি রাজ্য নিক, কিন্তু তারাও অস্বীকার করায় হাই কোর্ট ফের ক্যাগকে দায়িত্ব দেওয়ার দিকেই ঝুঁকেছে।
আগামী ৪ ডিসেম্বরের শুনানি গুরুত্বপূর্ণ
আদালত এই জট খুলতে এদিন কেন্দ্রের অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজুকে অনুরোধ করেছে, যেন ক্যাগের মাধ্যমে ফরেনসিক অডিট করানোর জন্য কোনও দক্ষ, অভিজ্ঞ আধিকারিকের ব্যবস্থা করা হয়। আগামী ৪ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানি ধার্য করা হয়েছে, সেদিন আদালতকে এই বিষয়ে জানাতে বলা হয়েছে।
টাকা ফেরত বন্ধ এবং অভিযোগ
এডিসি কমিটি গত দু’মাস ধরে আমানতকারীদের টাকা মেটানো বন্ধ রেখেছে। কমিটি জানিয়েছে, মামলা বিচারাধীন থাকায় তারা টাকা দেওয়া স্থগিত রেখেছে।
এদিকে, এডিসি কমিটির বিরুদ্ধেই গুরুতর অভিযোগ উঠেছে যে, তারা বাজেয়াপ্ত সম্পত্তি ও দিঘার হোটেল বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করছে। ইডি কর্তৃক বাজেয়াপ্ত কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পত্তির দায়িত্বে ছিল এই কমিটি। এখন সেই কমিটির বিরুদ্ধেই নয়ছয়ের অভিযোগ ওঠায় হাই কোর্ট কার্যত হয়রান।
আগামী ৪ ডিসেম্বরের শুনানিতে এই জটিলতার কোনও সুরাহা হয় কি না, এখন সেদিকেই সবার নজর।