রাজস্থানের জয়পুরে ফের একবার বাসে অগ্নিকাণ্ডের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল। মঙ্গলবার জয়পুরে এই দুর্ঘটনায় বাবা-মেয়ে-সহ দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় অনেকেই আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং তাঁদের জয়পুরের সাওয়াই মান সিং (SMS) হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। বাকি চারজন শাহপুরা উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
কীভাবে ঘটল দুর্ঘটনা?
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার একটি ১১ হাজার কিলোভোল্টের হাইটেনশন তার ছিঁড়ে বাসটির উপর পড়ে। এর ফলে বাসে উপস্থিত সকলেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন এবং মুহূর্তের মধ্যে বাসটিতে আগুন ধরে যায়।
সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট (এসডিএম) জানিয়েছেন, বাসটি অতিরিক্ত পণ্য বহন করে নিয়ে যাচ্ছিল। বাসের ছাদে অতিরিক্ত পণ্য রাখা ছিল, যা হাইভোল্টেজ তারে আঘাত করে। যার ফলেই তারটি ছিঁড়ে বাসের উপর পড়ে এবং বাসটিতে আগুন ধরে যায়।
তবে, গ্রামবাসীরা দাবি করেছেন যে বিপজ্জনক তারটি মেরামত করার জন্য তাঁরা অনেক দিন ধরেই বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে অভিযোগ করে আসছেন।
মৃত ও আহতদের পরিচয়:
মৃত দু’জনের নাম নাসিম (৫০) এবং তাঁর মেয়ে শাহিনম (২০)। তাঁরা উত্তরপ্রদেশের বরেলি থেকে টোডির একটি ইটভাটায় কাজ করতে এসেছিলেন। তাঁদের মৃতদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।
জয়পুর সরকারি হাসপাতালে রেফার করা পাঁচজন গুরুতর আহত ভুক্তভোগীর মধ্যে তিনজন মহিলা: নাজমা, সিতারা এবং নাহিম। আহত আরও দু’জনের নাম আজার এবং আলতাফ।
উদ্ধার ও সিলিন্ডার বিস্ফোরণ:
দমকল বিভাগ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে। দমকল বিভাগের এক আধিকারিক জানান, বাসটিতে ১৫টি এলপিজি সিলিন্ডার ছিল, যার মধ্যে দু’টি বিস্ফোরণ হয়েছে। তিনি বলেন, “বাসে কত জন যাত্রী ছিলেন তা জানা নেই, তবে আমরা তাঁদের মধ্যে ২৫ জনকে বাঁচাতে সক্ষম হয়েছি। ঘটনাস্থলেই দুই যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।”
পুলিশ ধ্বংসাবশেষের মধ্যে খোঁজ চালিয়ে যাত্রী এবং ক্ষতিগ্রস্তদের শনাক্ত করার জন্য পরিচয়পত্র পরীক্ষা করছে।
মুখ্যমন্ত্রীর শোক প্রকাশ:
বাস দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, “আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।” এর পাশাপাশি তিনি রাজস্থানে ঘন ঘন সড়ক দুর্ঘটনা এবং মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রাজস্থানের উপ-মুখ্যমন্ত্রী দিয়া কুমারীও নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
আগের দুর্ঘটনা:
প্রসঙ্গত, গত ১৫ অক্টোবর জয়সলমের থেকে রাজস্থানের যোধপুরগামী একটি বেসরকারি বাসে আগুন লেগে ২০ জনের ঝলসে মৃত্যু হয়েছিল এবং ১৬ জন আহত হয়েছিলেন। সেই দুর্ঘটনায় জানা গিয়েছিল, ৫৭ জন যাত্রী নিয়ে বাসটি ছাড়ে এবং পিছনের অংশ থেকে ধোঁয়া বের হওয়ার পর চালক বাস থামান, কিন্তু আগুন দ্রুত গ্রাস করে নেয়।