রাজপথে চপ-মুড়ি আর সিঙাড়া বিক্রি! নিয়োগের দাবিতে অভিনব ‘চপ শিল্প’ আন্দোলনে সামিল এসএসসি প্রার্থীরা

চাকরির নিয়োগপত্র এখনও অধরা, অথচ ফুরিয়ে যাচ্ছে বয়স। নিয়োগের দাবিতে দীর্ঘকালীন প্রতীক্ষা আর হতাশা থেকে এবার কলকাতার রাজপথে এক অভিনব প্রতিবাদের সাক্ষী থাকল সাধারণ মানুষ। হাতে চপ, মুড়ি এবং সিঙাড়া নিয়ে প্রতীকী ‘দোকান’ খুলে বিক্ষোভে সামিল হলেন এসএসসি (SSC) চাকরিপ্রার্থীরা। সরকারের ‘চপ শিল্প’ তত্ত্বকে হাতিয়ার করেই এই ব্যাঙ্গাত্মক প্রতিবাদের পথ বেছে নিয়েছেন তাঁরা।

বিক্ষোভস্থলে থাকা এক চাকরিপ্রার্থীর কথায় ধরা পড়ল চরম শ্লেষ। তিনি বলেন, “দিদির (মুখ্যমন্ত্রী) কথায় নত মস্তক হয়েই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। সরকার যখন বিকল্প কর্মসংস্থানের কথা বলে, তখন আমরা যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও কেন রাস্তায়? আমাদের দাবি সরকারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্যই এই অভিনব পদ্ধতি।”

স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগের আশায় কয়েক বছর ধরে লড়াই চালাচ্ছেন এই প্রার্থীরা। পরীক্ষা এবং মেধা তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও আইনি জটিলতা আর প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রিতার কারণে আজও স্কুলে যোগ দিতে পারেননি তাঁরা। সেই যন্ত্রণাকেই রাজপথে চপ-মুড়ি বিক্রির মাধ্যমে তুলে ধরেছেন তাঁরা।

সামাজিক বার্তা: প্রার্থীদের দাবি, এটি শুধুমাত্র কোনো মনোরঞ্জন নয়, বরং সমাজের কাছে একটি বার্তা যে যোগ্য শিক্ষকরা আজ রাজপথে খাবার বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

সৃজনশীলতা: তাঁদের মতে, গতানুগতিক ধর্মঘট বা চিঠিপত্র দিয়ে প্রশাসনের ঘুম ভাঙানো যাচ্ছে না, তাই এই সৃজনশীল প্রতিবাদের পথ বেছে নেওয়া।

হাতে খাবারের ঠোঙা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা হবু শিক্ষকদের এই দৃশ্য দেখে থমকে দাঁড়িয়েছেন পথচারীরা। অনেকেই তাঁদের সাথে কথা বলে সমবেদনা জানিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই প্রতিবাদের ছবি এবং ভিডিও মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়েছে। নেটিজেনদের একাংশ মনে করছেন, এটি হাসির ছলে এক চরম প্রশাসনিক ব্যর্থতারই প্রতিফলন।

বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, কোনো হিংসা বা বিশৃঙ্খলা নয়, তাঁরা চান শান্তিপূর্ণ উপায়ে প্রশাসনের টনক নাড়াতে। যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগের অধিকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত তাঁদের এই লড়াই জারি থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনরত প্রার্থীরা।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy