শীতের সকাল মানেই বাঙালির হেঁশেলে বড়ির ধুম। আর সেই বড়ি যদি হয় পূর্ব মেদিনীপুরের ঐতিহ্যবাহী ‘গয়না বড়ি’, তবে তা স্রেফ খাদ্য নয়, হয়ে ওঠে নিখুঁত শিল্পকলা। মেদিনীপুরের এই লোকশিল্পকে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দিতে এবং নতুন প্রজন্মের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে মহিষাদলে আয়োজিত হলো এক অভিনব গয়না বড়ি তৈরির প্রতিযোগিতা।
বাংলার লোকশিল্পের প্রদর্শনী: বিউলির ডাল, পোস্ত আর তিল দিয়ে মহিলারা যেভাবে হাতের জাদুতে বড়ির গায়ে নকশা ফুটিয়ে তোলেন, তা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নন্দলাল বসু। মহিষাদলের ‘বিশ্ব কলাকেন্দ্র’ আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় মহিষাদল ছাড়াও হলদিয়া ও তমলুকের প্রায় ৫০ জন মহিলা অংশগ্রহণ করেন। ডালের কারুকার্যে ফুটিয়ে তোলা হয় মা-বোনেদের বংশপরম্পরায় বয়ে চলা শিল্পকলা।
লক্ষ্য এবার ‘জিআই ট্যাগ’: আয়োজকদের মতে, গয়না বড়ি বাংলার লোকসংস্কৃতির এক অমূল্য রত্ন। ১৯৫৪ সালের কংগ্রেস অধিবেশনেও এই বড়ি প্রদর্শিত হয়েছিল। এবার এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে জিআই ট্যাগ (GI Tag) পাইয়ে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কোমর বেঁধে নামছে বিশ্ব কলাকেন্দ্র। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আগামী দিনে গয়না বড়ির বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।