প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) ‘চা-ওয়ালা’ অতীতকে ব্যঙ্গ করে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) দ্বারা তৈরি একটি বিতর্কিত ভিডিও শেয়ার করে চরম বিপাকে পড়লেন কংগ্রেস নেত্রী রাগিণী নায়েক। তিনি তাঁর ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে বিলাসবহুল রেড-কার্পেট অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে চা বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে, এমন একটি ভিডিও পোস্ট করেন। ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিজেপি, যারা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীকে ‘অপমান’ এবং তাঁর humble background-কে ব্যঙ্গ করার অভিযোগ তুলেছে।

রেড-কার্পেটে ‘চা বলো, চা-ইয়ে’
ভিডিওটির মূল বিষয়বস্তুতে দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী মোদী হালকা নীল কোট-প্যান্ট পরিহিত অবস্থায় কেটলি ও চায়ের গ্লাস হাতে আন্তর্জাতিক পতাকার আবহে হেঁটে চলেছেন। সবচেয়ে বিতর্কিত অংশটি হলো: প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠস্বরের অনুকরণ করে তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “চা বলো, চা-ইয়ে (কারও চা চাই)।” ভিডিওটির উৎস যাই হোক না কেন, এটি স্পষ্টতই প্রধানমন্ত্রীর জীবনের সেই অধ্যায়কে উপহাস করার চেষ্টা করেছে, যেখানে তিনি গুজরাটের রেল স্টেশনে চা বিক্রি করতেন বলে দাবি করেন।

‘অ্যালিট কংগ্রেস’ কঠোর পরিশ্রমী নেতাকে মানতে পারে না: বিজেপি
ভিডিওটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তেই বিজেপি মুখপাত্র শাহজাদ পুনাওয়ালা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি এটিকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ব্যক্তিগত আক্রমণ হিসেবে দেখছেন। পুনাওয়ালা কঠোর ভাষায় বলেন:

“রেণুকা চৌধুরীর মন্তব্যের পর এবার রাগিণী নায়েক প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘চা-ওয়ালা’ পটভূমি নিয়ে উপহাস করেছেন। এই ‘অ্যালিট’ বা উচ্চবিত্ত মনোভাবাপন্ন কংগ্রেস কখনওই একজন কঠোর পরিশ্রমী ওবিসি নেতাকে মেনে নিতে পারে না, যিনি সাধারণ পটভূমি থেকে উঠে এসেছেন।”

তিনি আরও হুঁশিয়ারি দেন যে, কংগ্রেস আগেও মোদীর শিকড় নিয়ে উপহাস করেছে এবং তাঁকে ১৫০ বারেরও বেশি অপমান করেছে। পুনাওয়ালার স্পষ্ট বক্তব্য, দেশের মানুষ কংগ্রেসের এই ঘৃণ্য কাজের জন্য কখনও ক্ষমা করবে না।

মাকে নিয়ে পুরোনো বিতর্কের রেশ
পুনাওয়ালার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর মাকে নিয়ে আক্রমণের যে উল্লেখ করা হয়েছে, তা মূলত গত সেপ্টেম্বরের একটি বিতর্কিত ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে। সেই সময় বিহার কংগ্রেস ইউনিট একটি ৩৬ সেকেন্ডের AI দ্বারা তৈরি ভিডিও প্রকাশ করেছিল। সেই ভিডিওতে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে তাঁর প্রয়াত মায়ের স্বপ্ন দেখতে দেখানো হয়, যেখানে তাঁর মা রাজ্যের রাজনীতি নিয়ে পুত্রের সমালোচনা করছেন। ব্যাপক রাজনৈতিক বিতর্কের জেরে পাটনা হাইকোর্ট কংগ্রেসকে সব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে দ্রুত ভিডিওটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল।

এই দুটি ঘটনাই প্রমাণ করে যে, রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে এআই প্রযুক্তির অপব্যবহার ব্যক্তিগত আক্রমণকে নতুন মাত্রা দিয়েছে, যা দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।