তৃণমূল কংগ্রেস থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পর চড়া সুরে আক্রমণ শুরু করেছেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। সম্প্রতি এবিপি আনন্দর ‘ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন’ অনুষ্ঠানে এসে তিনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন।
ফিরহাদ হাকিমের অভিযোগের জবাব:
তৃণমূলের মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে বেলডাঙায় বাবরি মসজিদ নির্মাণের চেষ্টা করে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা তৈরির অভিযোগ তুলেছিলেন। জবাবে হুমায়ুন কবীর ফিরহাদ হাকিমের পুরনো একটি বিতর্কিত মন্তব্য টেনে এনেছেন।
হুমায়ুন বলেন, “ববি হাকিমকে ও সারা বাংলার মানুষকে আপনার চ্যানেলের মাধ্যমে শোনাতে চাই… আপনি বেশ কিছুদিন আগে, প্রায় ১ বছর আগে একটা মুসলিম সমাজের অনুষ্ঠানে গিয়ে নিজেকে বলেছিলেন, আপনি সৌভাগ্যবান। মুসলিম হয়ে যারা জন্মগ্রহণ করেছে পৃথিবীতে… তাঁরা সৌভাগ্যবান। যারা অমুসলিম হয়ে জন্মগ্রহণ করেছেন, তাঁরা দুর্ভাগা। এটা কী ধরনের নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি বা সেকুলার…?”
হুমায়ুন আরও প্রশ্ন তোলেন, ফিরহাদ হাকিম সেদিন যা বলেছিলেন সেটা ঠিক, না আজ যেটা বলছেন সেটা ঠিক। তিনি মনে করিয়ে দেন, এই মন্তব্যের জন্য বিজেপির পরিষদীয় দল বারবার ববি হাকিমকে বয়কট করত এবং পরে স্পিকারের নির্দেশে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমাই চেয়েছিলেন। হুমায়ুন কবীর দাবি করেন, তিনি কোনো অন্যায় করেননি এবং কারও কাছে ক্ষমাও চান না।
সাসপেনশন ও অভিমান:
সাসপেনশনের পরও কেনও তিনি ‘বিজেপির বি-টিম’ তকমা নিয়ে সরাসরি ‘RSS মার্কা মুখ্যমন্ত্রীর’ থেকে ‘direct BJP-র মুখ্যমন্ত্রী’ হওয়াকে স্বাগত জানাচ্ছেন— এই প্রশ্নের জবাবে হুমায়ুন কবীর পাল্টা প্রশ্ন তোলেন।
হুমায়ুন বলেন, “বাবুল সুপ্রিয় যখন বিজেপির সাংসদ ছিলেন, মন্ত্রী ছিলেন, তখন আসানসোলে তিনি দাঙ্গা লাগিয়েছিলেন…সেই বাবুল সুপ্রিয় যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় এসেই সদস্য হয়ে যান…গুরুত্বপূর্ণ জায়গা পেয়ে যান, তাহলে আমি সেখান থেকে বুঝতে পারি, মুসলিমদের কয়েকজনকে ঠুঠো জগন্নাথ করে…”
তিনি পরিষ্কার জানান, তাঁর কোনো অভিমান নেই, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সঙ্গে মিথ্যাচার করেছেন। তিনি লোকসভা নির্বাচনের একটি গোপন তথ্য ফাঁস করেন। হুমায়ুন জানান, ২৯ মার্চ, ২০২৪ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে ডেকেছিলেন এবং ১ মে, ২০২৪ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং গড়িয়ার এক সভা থেকে হেলিকপ্টার থেকে নেমে তাঁকে বলেছিলেন, “আইবির রিপোর্ট আছে, অধীর চৌধুরী ৭০ থেকে ৮০ হাজার ভোটে জিতে যাচ্ছে, সেলিম ৩০ থেকে ৪০ হাজার ভোটে জিতে যাচ্ছে… হুমায়ুন তুমি কিছু একটা করো। তোমার ওপর মুর্শিদাবাদের মানুষ আস্থা রাখে ভরসা রাখে…” হুমায়ুন প্রশ্ন তোলেন, যদি তিনি অযোগ্যই হন, তবে মুখ্যমন্ত্রী কেন তাকে ডেকে এমন কথা বললেন?