‘মুসলিমরা ঝামেলা করলে FIR নয়, অ্যাকশন হবে’! সুকান্তের মন্তব্য সমর্থন করে ‘গাই-তোষণ’ সংস্কৃতি নিয়ে তীব্র আক্রমণ তথাগত রায়ের

রাজ্য রাজনীতিতে ফের একবার রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে উঠল। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের এক মন্তব্যের সূত্র ধরে এবার আসরে নামলেন দলের প্রবীণ নেতা তথাগত রায়। সুকান্ত মজুমদার একটি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন যে যদি বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় আসে, তবে “কোনো মুসলিম যদি ঝামেলা করার চেষ্টা করে, তাহলে কোনো FIR হবে না। সেই জায়গায় অ্যাকশন নেওয়া হবে।”

তথাগত রায়ের সমর্থন ও ‘দুধেল গাই’ মন্তব্য:

সুকান্তের এই বিতর্কিত মন্তব্যকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে বিজেপির প্রবীণ নেতা তথাগত রায় তাঁর ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যে মুসলিমরা “কোনো দোষ করতেই পারে না।” তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে মমতার ‘দুধেল গাই’ সংস্কৃতিতে শুধু আছে মুসলিম তোষণ। তবে তিনি স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে বিজেপি এই রাজ্যে ক্ষমতায় এলে কোনো রকমের বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না।

ইতিহাসের বিতর্কিত তুলনা:

তথাগত রায় তাঁর এই ‘পক্ষপাতদুষ্ট সংস্কৃতি’কে নতুন ঘটনা নয় বলে দাবি করেছেন এবং এর সূত্রপাত মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর সময় থেকেই হয়েছিল বলে উদাহরণ টেনেছেন। তিনি বলেন, ১৯২১ সালের মোপলাহ বিদ্রোহে প্রায় দশ হাজার হিন্দু নিহত হয়েছিলেন, কিন্তু তবুও গান্ধী সেই মোপলাহ মুসলমানদের “God-fearing Muslims” বলে বর্ণনা করেছিলেন।

তথাগত বলেন, “সেই সময় থেকেই এক ধরনের একপাক্ষিক সহনশীলতা ও পক্ষপাতদুষ্ট সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, যা আজও আমাদের রাজনীতিতে রয়ে গিয়েছে।” তিনি তাঁর পোস্টে স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন যে এই পক্ষপাত আর সহ্য করা হবে না। বিশৃঙ্খলার পরিস্থিতি তৈরি হলে সুকান্তের কথা মতো সেখানেই চরম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক ও জনসমর্থন:

তবে ইতিহাসের এই তুলনা এবং বক্তব্য ঘিরেও নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন, এই ধরনের মন্তব্য রাজ্যের সংবেদনশীল সামাজিক পরিবেশকে আরও উত্তপ্ত করে তুলতে পারে। এক বিশ্লেষক বলেন, “বাংলার রাজনৈতিক ঐতিহ্য বহুত্ববাদ এবং সহাবস্থানের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। এই ধরনের মন্তব্য সেই ঐতিহ্যকেই চ্যালেঞ্জ জানায়।”

অন্যদিকে, তথাগত রায়ের মন্তব্যের সমর্থনে সাধারণ মানুষও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, এই তোষণ নীতির জন্যই পশ্চিমবঙ্গে এই অরাজকতার সৃষ্টি হচ্ছে। তাঁরা মমতা সরকারের ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিলের প্রসঙ্গও তুলে ধরেছেন। মুর্শিদাবাদ, মোথাবাড়ি, মহেশতলার মতো ঘটনার উদাহরণ দিয়ে তাঁরা বলেছেন যে এই রাজ্যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে দাঙ্গা বাঁধানো হয়েছে এবং এর জন্য মমতা সরকার সম্পূর্ণ দায়ী। তবে এই অরাজকতা বেশিদিন চলতে পারে না এবং এর জন্য কড়া পদক্ষেপ দরকার বলেও অনেকে মনে করেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy