মাঝসমুদ্রে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের ওপর বাংলাদেশি নৌসেনার বর্বরোচিত হামলা! বঙ্গোপসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমানার কাছে ‘পারমিতা-১১’ নামে একটি ভারতীয় ট্রলারকে ধাক্কা মেরে ডুবিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বাংলাদেশের উপকূলরক্ষী বাহিনীর বিরুদ্ধে। এই দুর্ঘটনায় ইতিমধ্যে দুই মৎস্যজীবীর নিথর দেহ উদ্ধার হয়েছে, এখনও নিখোঁজ আরও তিনজন।
উদ্ধার হওয়া মৎস্যজীবীদের বয়ানে উঠে আসছে শিউরে ওঠা সব তথ্য। তাঁদের দাবি, সোমবার ভোরে যখন তাঁরা মাছ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন কোনও সতর্কবার্তা ছাড়াই ধেয়ে আসে বাংলাদেশি নৌসেনার জাহাজ। ট্রলারের হাল ধরে থাকা মৎস্যজীবী রাজদুল আলি শেখকে লক্ষ্য করে সোজা বল্লম ছুড়ে মারে ওপার বাংলার সেনারা। বল্লমটি শরীরে বিঁধতেই যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে গভীর সমুদ্রে তলিয়ে যান তিনি।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রলারটিকে মঙ্গলবার গভীর রাতে নামখানা বন্দরে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া দুই মৃত মৎস্যজীবীর নাম:
সঞ্জীব দাস: বাড়ি কাকদ্বীপের পশ্চিম গঙ্গাধরপুর।
রঞ্জন দাস: বাড়ি পূর্ব বর্ধমান।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সহ মৎস্য আধিকারিক (সামুদ্রিক) সুরজিৎ বাগ জানিয়েছেন, ট্রলারে থাকা ১৬ জনের মধ্যে ১১ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। নিখোঁজ তিনজনের খোঁজে উপকূলরক্ষী বাহিনীর তল্লাশি চলছে।
উদ্ধার হওয়া মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, শুধু ধাক্কা মারাই নয়, বাংলাদেশি নৌসেনার উদ্দেশ্য ছিল ১৬ জনকেই খতম করা। ট্রলারটি ডুবে যাওয়ার সময় কোনো সাহায্য না করে উল্টে জাহাজ ঘুরিয়ে তাঁরা পালিয়ে যান। ট্রলারের মাঝি রাখাল দাসের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে ডায়মন্ড হারবার মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গত ১৪ ডিসেম্বর নামখানা থেকে মাছ ধরতে বেরিয়েছিলেন এই মৎস্যজীবীরা। ঘরের মানুষগুলো ফিরলেও কেউ ফিরলেন নিথর দেহে, আর কেউ ফিরলেনই না। এই ঘটনায় দুই দেশের কূটনৈতিক স্তরে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। মৎস্যজীবী সংগঠনগুলো এই ‘অমানবিক’ আচরণের বিচার ও মৃতদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি তুলেছে।