রাজ্যজুড়ে চলমান ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধনী প্রক্রিয়া (SIR) ঘিরে এবার নজিরবিহীন বিতর্কের সৃষ্টি হলো। খসড়া তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ল বারাসতের চারবারের তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের দুই ছেলের। শুধু তাই নয়, নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে বিডিও অফিসে সশরীরে হাজির হওয়ার জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছে সাংসদের মা ও বোনকেও। এই ঘটনা সামনে আসতেই নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিলেন তৃণমূল সাংসদ।
সাংসদ পরিবারের বিড়ম্বনা: কাকলি ঘোষ দস্তিদার জানিয়েছেন, তাঁর দুই পুত্র—যাঁরা দুজনেই দায়িত্বশীল সরকারি চাকুরিজীবী এবং প্রাক্তন মন্ত্রী সুদর্শন ঘোষ দস্তিদারের সন্তান—তাঁদের নাম ভোটার তালিকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই চিত্র সাংসদের মা ও বোনের ক্ষেত্রেও। অন্য বুথের ভোটার হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়নি। এই ‘হেনস্থা’র প্রতিবাদ জানিয়ে সাংসদ প্রশ্ন তুলেছেন, “আমি একজন সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও যদি আমার পরিবারের এই অবস্থা হয়, তবে প্রত্যন্ত গ্রামের সাধারণ মানুষের কী দশা হচ্ছে? জবরদস্তি নাম বাদ দিয়ে মানুষকে বিপদে ফেলা হচ্ছে।”
অসঙ্গতির দীর্ঘ তালিকা: রাজ্যজুড়ে SIR প্রক্রিয়ায় এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিক চাঞ্চল্যকর ভুল সামনে এসেছে। ডানকুনির তৃণমূল কাউন্সিলর সূর্য দে-কে খসড়া তালিকায় ‘মৃত’ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। খণ্ডঘোষের তৃণমূল বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগের পরিবারকেও একইভাবে শুনানির জন্য তলব করা হয়েছে।
তৃণমূলের রাজনৈতিক অবস্থান: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শুরু থেকেই এই তড়িঘড়ি সংশোধনী প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করে আসছেন। তাঁদের দাবি, যে কাজের জন্য দু’বছর সময় প্রয়োজন, তা কেন মাত্র দু’মাসে শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে? ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা যাচাই নিয়ে শাসক ও বিরোধী শিবিরের সংঘাত এখন তুঙ্গে। আজকের এই ঘটনার পর সাংসদ পরিবারের সদস্যরা বিডিও অফিসে শুনানিতে হাজির হতে পারেন বলে জানা গিয়েছে।