বিশ্বজয়ী ফুটবল সম্রাট লিওনেল মেসির ভারত সফর শেষ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাঁর রেখে যাওয়া রেশ যেন কাটছে না। সম্প্রতি ভারত সফর নিয়ে নিজের ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন এলএম১০। আর সেই ভিডিও ঘিরেই শুরু হয়েছে এক নতুন বিতর্ক। মুম্বই, হায়দরাবাদ ও দিল্লির ঝলক থাকলেও, মেসির সেই স্মৃতিচারণায় আশ্চর্যজনকভাবে ব্রাত্য রয়ে গেল তিলোত্তমার ফুটবল মক্কা— যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন।
ভিডিওতে কী আছে আর কী নেই? মেসির শেয়ার করা ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে হায়দরাবাদে মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডির সঙ্গে তাঁর ফুটবল খেলার মুহূর্ত, মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে মাস্টার ব্লাস্টার সচিন তেন্ডুলকরের সঙ্গে আড্ডা এবং দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামের কিছু দৃশ্য। কলকাতার কথা বলতে গিয়ে ভিডিওতে কেবল জায়গা পেয়েছে তাঁর মূর্তি উন্মোচনের একটি ছোট্ট ঝলক। কিন্তু যে যুবভারতীকে ঘিরে গোটা বাংলা উন্মাদনায় ভাসছিল, সেই স্টেডিয়ামের কোনো ফুটেজ বা সেখানে যাঁদের সঙ্গে মেসিকে দেখা গিয়েছিল, তাঁদের কাউকেই ভিডিওতে রাখেননি এলএম১০।
কেন এই নীরবতা? ক্রীড়াপ্রেমীদের মতে, গত শনিবার যুবভারতীতে যে চরম বিশৃঙ্খলা ও অব্যবস্থাপনা তৈরি হয়েছিল, সম্ভবত সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণেই মেসি তাঁর ভিডিওতে যুবভারতীর কোনো অংশ রাখেননি। নেতা-মন্ত্রীদের সেলফি তোলার হুড়োহুড়ি আর দর্শকদের গ্যালারি ভেঙে মাঠে নেমে আসার সেই ভয়াবহ দৃশ্য কি তবে বিদেশের মাটিতে বাংলার মুখ পুড়িয়ে দিল? মেসির ভিডিওতে কলকাতার কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতি সেই জল্পনাকেই উসকে দিচ্ছে।
ক্যাপশনে অবশ্য সৌজন্য বজায়: ভিডিওর ক্যাপশনে অবশ্য আভিজাত্য বজায় রেখেছেন এলএম১০। তিনি লিখেছেন, “প্রণাম ভারত। দিল্লি, মুম্বই, হায়দরাবাদ এবং কলকাতায় যে আতিথেয়তা ও ভালোবাসা আমি পেয়েছি, তার জন্য ধন্যবাদ। আশা করছি, ভারতে ফুটবলের ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল হবে।” যদিও ভিডিওতে দেখা গিয়েছে শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েঙ্কা ও পার্থ জিন্দালকে, কিন্তু ব্রাত্য থেকে গিয়েছেন আয়োজক কমিটির অনেক চেনা মুখই।
কলকাতার সেই কালিমালিপ্ত রাত: উল্লেখ্য, গত শনিবার মেসির অনুষ্ঠানে কয়েক মিনিটের অব্যবস্থাপনায় সবকিছু পণ্ড হয়ে গিয়েছিল। ভিআইপি-দের দাপটে প্রিয় তারকাকে দেখতে না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন ফুটবলপ্রেমীরা। গ্যালারি থেকে মাঠে নেমে চেয়ার ও তাঁবু ভাঙচুর, এমনকি অগ্নিসংযোগের চেষ্টার সেই কলঙ্কিত ছবি বিশ্ববাসীর নজরে এসেছে। মেসির ইনস্টাগ্রাম ভিডিও কি পরোক্ষভাবে সেই বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধেই কোনো নীরব প্রতিবাদ? এই প্রশ্নই এখন ঘোরাফেরা করছে ক্রীড়া মহলে।