বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতাকে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এক ‘অত্যন্ত বাস্তব হুমকি’ (Very Real Threat) হিসেবে বর্ণনা করলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-কে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে জয় দাবি করেছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাংলাদেশে উগ্রপন্থী ও মৌলবাদী শক্তিকে মদত দিচ্ছে।
জয়ের দাবি অনুযায়ী, বাংলাদেশে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলোর কার্যকলাপ আবার শুরু হয়েছে। তিনি অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে জানান:
সক্রিয় জঙ্গি শিবির: বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরগুলো আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এমনকি আল-কায়েদার মতো আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
লস্করের আস্ফালন: পাকিস্তানের কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা (LeT)-র শীর্ষ নেতারা বর্তমানে বাংলাদেশে প্রকাশ্য জনসভায় ভাষণ দিচ্ছেন, যা ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক সংকেত।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে সংসদীয় নির্বাচনের পরিকল্পনা থাকলেও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার যে চেষ্টা চলছে, তার তীব্র প্রতিবাদ জানান জয়। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ দেশের বৃহত্তম ও প্রাচীনতম দল। একে বাদ দিয়ে ভোট করার অর্থ হলো দেশের অর্ধেক ভোটারকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা।” তাঁর মতে, জামায়াতে ইসলামীর মতো দলগুলোকে অবাধ সুযোগ দিয়ে বাংলাদেশে এক বিশেষ শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার নীল নকশা তৈরি হয়েছে।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের (সেভেন সিস্টার্স) নিরাপত্তার প্রসঙ্গ টেনে জয় মনে করিয়ে দেন যে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ওই সীমান্তগুলো সম্পূর্ণ সন্ত্রাসবাদমুক্ত ছিল। কিন্তু বর্তমান অস্থিতিশীলতা সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তার ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। তাই তিনি ভারত সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন: ১. আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে। ২. বাংলাদেশে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করতে বিশ্ববাসীকে জোরালো আহ্বান জানাতে।
সজীব ওয়াজেদ জয়ের এই মন্তব্য ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বর্তমান টানাপোড়েনের মাঝে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। দিল্লির দরবারে জয়ের এই আরজি কতটা গুরুত্ব পায়, এখন সেটাই দেখার।