ইনস্টাগ্রামে ‘ভাইরাল ১৯ মিনিটের ভিডিও’ নিয়ে সমাজমাধ্যমে হঠাৎ করেই যে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে, তা এখন গুগলে সবচেয়ে বেশি অনুসন্ধানের বিষয়। মানুষ কৌতূহলের বশে এই ভিডিওটি খুঁজলেও সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা কঠোর সতর্কতা জারি করে বলছেন— এটি আসলে স্ক্যামারদের পাতা মারাত্মক ফাঁদ।
সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অনলাইনে ‘১৯ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের অন্তরঙ্গ ভিডিও’ নিয়ে যে গুজব ছড়াচ্ছে, তার কোনও প্রকৃত অস্তিত্ব বা আসল কপি কোথাও পাওয়া যায়নি। কিন্তু মানুষের এই কৌতূহলকে কাজে লাগিয়ে অপরাধী চক্রগুলো ইনস্টাগ্রাম, এক্স (X) এবং টেলিগ্রামে নকল লিঙ্ক ছড়িয়ে দিচ্ছে।
ক্লিক করলেই চুরি, টাকা দিলেই বিপদ:
তদন্তকারীরা বলছেন, স্ক্যামাররা এখন ‘ভাইরাল ১৯ মিনিটের ভিডিও’ শব্দটিকে কাজে লাগিয়ে ছোট করা লিঙ্ক (short URL) এবং নকল ওয়েবপেজ ছড়াচ্ছে। যে কেউ কৌতূহলের বশে এই লিঙ্কে ক্লিক করলেই মারাত্মক বিপদে পড়তে পারেন। মোবাইল বা কম্পিউটারে লিঙ্ক খোলার সঙ্গে সঙ্গেই অজান্তে ক্ষতিকর সফটওয়্যার ইনস্টল হয়ে যেতে পারে।
এই ম্যালওয়্যার ইনস্টল হওয়ার ফলে স্ক্যামাররা আপনার ফোনের সমস্ত ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে সক্ষম হবে— যার মধ্যে পাসওয়ার্ড, ব্যাঙ্কের তথ্য, সেভ করা ওটিপি (OTP) পর্যন্ত থাকতে পারে। কিছু স্ক্যামার সরাসরি মেসেজ পাঠিয়ে টাকার বিনিময়ে ভিডিওটি দেওয়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, যা আসলে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একটি কৌশল।
আইনি ঝুঁকি: ভিডিও দেখা বা শেয়ার করা দণ্ডনীয় অপরাধ:
বিশেষজ্ঞরা শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত ঝুঁকি নয়, আইনি ঝুঁকি নিয়েও সতর্ক করেছেন। আইনজীবীরা স্পষ্ট করে বলছেন, ভিডিওটি আসল হোক বা নকল, কোনও অশ্লীল বা যৌন প্রকৃতির ক্লিপ যদি কেউ সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে বা শেয়ার করে, তবে তা ভারতীয় আইনের চোখে গুরুতর অপরাধ।
তথ্যপ্রযুক্তি (IT) আইনের ৬৭ ধারা অনুসারে, অনলাইনে অশ্লীল কন্টেন্ট ছড়ানো দণ্ডনীয় অপরাধ।
যদি সেই কন্টেন্টে যৌন কার্যকলাপ দেখানো হয়, তবে IT আইনের ৬৭-এ ধারা আরও কঠোরভাবে প্রযোজ্য হয়।
পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে অভিযুক্তদের জরিমানা থেকে শুরু করে জেল পর্যন্ত হতে পারে। মজা করে বা কৌতূহলবশত এরকম ভিডিও শেয়ার করলেও মারাত্মক আইনি বিপদে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের জরুরি পরামর্শ:
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা সাধারণ জনগণকে ভাইরাল হওয়া ‘১৯ মিনিটের ভিডিও’ সম্পর্কিত কোনও লিঙ্ক ক্লিক, ডাউনলোড বা শেয়ার করা থেকে কঠোরভাবে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। যে সকল ব্যবহারকারী মনে করছেন যে তারা সন্দেহজনক লিঙ্কের সাথে মিথস্ক্রিয়া করেছেন, তাদের অবিলম্বে নিরাপত্তা অ্যাপ আপডেট করা, ডিভাইস স্ক্যান করা এবং সমস্ত ইমেল ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা উচিত। অনলাইনে ভাইরাল হওয়া বেশিরভাগ ভিডিও ভুয়ো হয়, এই সতর্কবার্তা মাথায় রাখা জরুরি।