‘ভর্তিশূন্য স্কুল’ বিতর্কে অগ্নিগর্ভ বাংলা! কেন্দ্রীয় রিপোর্টকে ‘চিরন্তন মিথ্যা’ বলে খারিজ করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু

বাংলার হাজার হাজার স্কুলে গত এক বছরে পড়ুয়া ভর্তির সংখ্যা শূন্য। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে এমনই চাঞ্চল্যকর পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে। যদিও সেই রিপোর্টে বিজেপি শাসিত রাজ্যের নামও ছিল, তবে ভর্তিশূন্য স্কুলের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ ছিল শীর্ষে। কেন্দ্রের এই সমীক্ষাকে এবার সরাসরি ‘চিরন্তন মিথ্যা’ বলে দাগালেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

কেন্দ্রীয় রিপোর্টে কী আছে?

কেন্দ্রীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, গোটা দেশে ৭ হাজার ৯৯৩টি স্কুলে গত এক বছরে (২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে) পড়ুয়া ভর্তির সংখ্যা শূন্য। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, এই স্কুলগুলিতেই বর্তমানে ২০ হাজার শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। নয়াদিল্লির রিপোর্ট বলছে, গত এক বছরে বাংলায় ৩ হাজার ৮১২টি স্কুলে কোনো পড়ুয়াই ভর্তি হননি। অথচ সেই স্কুলগুলিতে মোট শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন ১৭ হাজার ৯৬৫ জন। বাংলার পরেই এই তালিকায় নাম রয়েছে তেলেঙ্গানা ও মধ্য প্রদেশের। তবে উত্তর প্রদেশে এই রকম স্কুলের সংখ্যা নগণ্য।

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বক্তব্য:

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু কেন্দ্রের এই রিপোর্টকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি সরাসরি বলেছেন, “বিজেপি চিরন্তন মিথ্যাবাদী।” তাঁর দাবি, গত এক দশকের বেশি সময় ধরে বাংলায় হাজার হাজার নতুন স্কুল তৈরি ও পুরনো স্কুলগুলির পরিকাঠামো সংস্কার করেছে রাজ্য সরকার। শিক্ষাকে সুনিশ্চিত করতে একাধিক প্রকল্প এনেছে এবং স্কলারশিপ প্রদান করেছে। ব্রাত্যর কথায়, ‘শুধুমাত্র শেষ শিক্ষাবর্ষেই সাড়ে পাঁচ লক্ষের অধিক পড়ুয়াকে স্কলারশিপ প্রদান করেছে রাজ্য সরকার।’

ব্রাত্য বসুর যুক্তি হলো:

১. UDISE কোড বেসরকারি ও সরকারি উভয় স্কুলের জন্য বরাদ্দ, সুতরাং এই ভর্তিশূন্য স্কুলের দায় শুধুমাত্র রাজ্য সরকারের নয়। ২. আজ ভর্তি হয়নি মানে আগামীতেও হবে না এমনটা নয়। ৩. যে সকল স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা কমেছে, সেখান থেকে শিক্ষক ও বাকি পড়ুয়াদের নিকটবর্তী অন্য স্কুলে স্থানান্তর করা হয়েছে।

বিজেপির পাল্টা আক্রমণ:

কেন্দ্রের রিপোর্টকে হাতিয়ার করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আসরে নেমেছে বঙ্গ বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘এটাই কি উন্নয়নের মডেল? যেখানে স্কুল আছে, শিক্ষক আছে, কিন্তু পড়ুয়া নেই। যেখানে শিক্ষা নয়, শুধুই চলছে দুর্নীতির পাঠ। সময় এসেছে পরিবর্তনের।’

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy