দেশের বৃহত্তম বিমান সংস্থা ইন্ডিগো টানা তৃতীয় দিনেও চূড়ান্ত অস্থিরতার মুখে। শুক্রবার ভোর থেকেই দেশের নানা প্রান্তে বিমানবন্দরে যাত্রীদের লম্বা লাইন, হাহাকার, আর তার মধ্যেই বাতিল হয়েছে ৬০০-রও বেশি ফ্লাইট। এর আগে বৃহস্পতিবারও বাতিল হয়েছিল ৫৫০টির বেশি উড়ান। কার্যত দু’দিনে প্রায় ১২০০ ফ্লাইট বাতিল!
সবচেয়ে বিপর্যস্ত রাজধানী দিল্লি। আজ এখানে ২২৫টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল হওয়ার পর সন্ধ্যা নামতেই গোটা ইন্ডিগো অপারেশন কার্যত থমকে গিয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শনিবার রাত বারোটা পর্যন্ত দিল্লি থেকে আর কোনো ইন্ডিগো বিমান উড়বে না!
বিপর্যয়ের কারণ কী? ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পাইলট সংকট এবং শীতকালীন ঘন অপারেশনের চাপ একসঙ্গে পড়ে এই গোলমাল আরও বেড়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন এফডিটিএল (ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশনস) নিয়ম, যেখানে পাইলটদের বিশ্রাম সময় বাড়ানো এবং ডিউটি আওয়ার কমানোর নির্দেশ রয়েছে। সংস্থার দাবি, এই নিয়ম পুরোপুরি কার্যকর হতে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় লাগবে, ততদিন আংশিক ছাড় দিলে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব। নাগরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী রাম মোহন নাইডুর ডাকা বৈঠকে ইন্ডিগো এই চাপের কথা স্বীকার করেছে।
দেশজুড়ে চিত্র: দিল্লিতে ২৩৫টি, মুম্বইতে ১০৪টি (৫৩ ডিপারচার, ৫১ অ্যারাইভাল), বেঙ্গালুরুতে ১০২টি (৫০ ডিপারচার, ৫২ অ্যারাইভাল), হায়দরাবাদে ১৩২টি (৭১ ডিপারচার, ৬১ অ্যারাইভাল) এবং আমেদাবাদে ৮৬টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। চেন্নাই, পুনে, কলকাতা, তিরুবনন্তপুরম, শ্রীনগর, জম্মু ও জয়পুর—সর্বত্রই হয় ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, অথবা সেগুলি চরম দেরিতে চলছে। কলকাতার অবস্থা: গত তিন দিনে ৪৬৮টির মধ্যে ৯২টি বাতিল ও ৩২০টি দেরিতে।
পুনে বিমানবন্দরে একাধিক ইন্ডিগো বিমান ক্রু না থাকার কারণে মাটিতেই দাঁড়িয়ে রয়েছে, যার ফলে পার্কিং বে তে ভিড় বেড়ে গিয়ে অন্যান্য সংস্থার ফ্লাইটেও দেরি হচ্ছে। দেশজুড়ে বিমানবন্দরগুলিতে যাত্রীদের ক্ষোভ, উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা চরমে পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে ইন্ডিগো জানিয়েছে, তারা বিমান মন্ত্রক ও ডিজিসিএ-এর সঙ্গে সমন্বয়ে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে এবং যাত্রার আগে ফ্লাইট স্ট্যাটাস দেখে নেওয়ার অনুরোধ করেছে।