দিল্লিতে যমুনা নদীর দূষণ দীর্ঘদিনের সমস্যা। গত বিধানসভা নির্বাচনে আপের বিরুদ্ধে বিজেপির অন্যতম হাতিয়ার ছিল এই যমুনা দূষণ ইস্যু। শাসক বদলেছে, তবে সমস্যা পাল্টায়নি। এবার এই বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সম্ভাব্য ছটপুজোতে অংশগ্রহণকে ঘিরে। আম আদমি পার্টির (AAP) অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীকে যাতে দূষিত জলে নামতে না হয়, সেই কারণেই বিজেপি একটি ‘নকল’ যমুনা নদী বা কৃত্রিম পুকুর তৈরি করেছে।
আপ নেতা তথা দিল্লি রাজ্য সভাপতি সৌরভ ভরদ্বাজের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর জন্য আলাদা একটি কৃত্রিম পুকুর বানানো হয়েছে, যেখানে ঢালা হয়েছে বিশুদ্ধ পানীয় জল। অন্যদিকে, সাধারণ ভক্তদের পুজো করতে হচ্ছে যমুনার বিষাক্ত জলেই, যা তাঁদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে।
সৌরভ ভরদ্বাজ রবিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “বিহার নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক প্রচারের জন্য বিজেপি মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করছে। প্রধানমন্ত্রীর জন্য বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে একটি ‘নকল ঘাট’, আর বাকিরা দূষিত যমুনার জলেই পুজো দিচ্ছেন।” তিনি আরও দাবি করেন, ওয়াজিরাবাদ জলশোধনাগারের পাইপলাইন থেকে রাজধানীর পানীয় জল এনে সেই পুকুরে ঢালা হচ্ছে, যা মূলত সাধারণ নাগরিকদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। তিনি অভিযোগ করেন, “রাজনৈতিক লাভের জন্য জনগণের জল অপচয় করছে বিজেপি।”
আপ নেতার দাবি, যমুনার জল এখনও ‘ভয়ঙ্কর দূষিত’, এবং দিল্লি দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী এই জলে গুরুতর রোগ সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি নাকি রাসায়নিক ছিটিয়ে ও সাজানো ঘাট বানিয়ে দূষণ আড়াল করার চেষ্টা করছে এবং “ছবি তোলা আর নাটক দেখানো ছাড়া তাদের কিছুই করার নেই।”
রাজনৈতিক মহলের মতে, বিহার বিধানসভা নির্বাচন (২০২৫) সামনে রেখে বিজেপি ‘হিন্দুত্বের এজেন্ডা’তে জোর দিচ্ছে এবং ছটপুজো সেই কৌশলেরই অংশ। প্রধানমন্ত্রী যমুনার ঘাটে পুজোয় অংশ নেবেন—এই বার্তা ছড়িয়ে দেওয়াই মূল উদ্দেশ্য। তবে যমুনার জল দূষণের বাস্তবতা এবং কৃত্রিম ঘাট তৈরির অভিযোগে কার্যত বিপাকে পড়েছে বিজেপি। যদিও বিজেপির তরফে এখনও কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া মেলেনি।