বিয়ের পর চব্বিশ ঘণ্টাও কাটল না। শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছতেই নববধূর কাছে দাবি করা হলো স্বামীর জন্য বাপের বাড়ি থেকে রয়্যাল এনফিল্ড বুলেট মোটরসাইকেল এনে দিতে হবে। একান্তই তা সম্ভব না হলে, চাওয়া হলো ২ লক্ষ টাকা নগদ। এই যৌতুকের দাবি মানতে রাজি না হওয়ায় বিয়ের পরদিনই নববধূকে মারধর করে বাপের বাড়িতে ফেরত পাঠিয়ে দিল স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
চাঞ্চল্যকর এমন অভিযোগ উঠেছে উত্তর প্রদেশের কানপুরে। গত ২৯ নভেম্বর কানপুরের জুহি এলাকার বাসিন্দা লুবনা এবং মহম্মদ ইমরানের মুসলিম রীতি মেনে বিয়ে হয়। পরের দিন, নতুন সংসার করার স্বপ্ন নিয়ে লুবনা শ্বশুরবাড়ি পৌঁছন। কিন্তু সেখানে পৌঁছতেই তাঁর সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।
অভিযোগ, লুবনা পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে ঘিরে ধরে। তাঁরা দাবি করে, লুবনা তাঁর স্বামীর জন্য কিছুই নিয়ে আসেননি। তাই তাঁর বাপের বাড়ি থেকে হয় একটি রয়্যাল এনফিল্ড মোটরসাইকেল কিনে দিতে হবে, নতুবা ২ লক্ষ টাকা নগদ দিতে হবে।
এনডিটিভি-কে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় লুবনা অভিযোগ করেছেন, শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর গয়না এবং বাপের বাড়ি থেকে আনা নগদ টাকাও কেড়ে নেয়। ওই নববধূ বলেন, “টাকা নিয়ে আসার জন্য ওরা আমাকে মারতে মারতে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়।”
লুবনার মা মেহতাবের কথায়, “সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ আমি দেখি লুবনা বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ কেন ও ফিরে এল জিজ্ঞেস করায় মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে গোটা ঘটনা বলল।”
লুবনার পরিবারের অভিযোগ, মেয়ের বিয়েতে তাঁরা লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন। উপহার হিসেবে ইমরানের পরিবারকে সোফা সেট, টেলিভিশন, ওয়াশিং মেশিন, ড্রেসিং টেবল, ওয়াটার কুলার, ডিনার সেট, পোশাক, স্টিল এবং পিতলের বাসনপত্রও দেওয়া হয়েছিল। লুবনার পরিবারের আরও অভিযোগ, আগে থেকে মোটরসাইকেল অথবা টাকার কথা বললে তাঁরা কখনোই ইমরানের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতেন না।
লুবনার মা দাবি করেছেন, তাঁরা মেয়ের বিয়েতে সাধ্যমতো সব করেছেন। এখন তাঁরা সুবিচার চান এবং বিয়েতে খরচ করা টাকাও ফেরত চান। ইমরানের পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের পর পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে।