বছরের শুরুতেই রাজধানী দিল্লির রাজপথে বড়সড় বিপ্লব ঘটতে চলেছে। ওলা (Ola), উবের (Uber) কিংবা র্যাপিডো-র মতো অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলির একাধিপত্য কমাতে ১ জানুয়ারি থেকেই চালু হতে চলেছে ‘ভারত ট্যাক্সি’ (Bharat Taxi)। এটি হতে চলেছে দেশের প্রথম কো-অপারেটিভ ভিত্তিক ট্যাক্সি পরিষেবা। যা সরাসরি স্বস্তি দেবে সেই সব যাত্রীদের, যারা পিক আওয়ারে অতিরিক্ত ভাড়ার (Surge Pricing) চোটে নাজেহাল হন।
কী এই ‘ভারত ট্যাক্সি’? সহকার ট্যাক্সি কো-অপারেটিভ লিমিটেড (Sahakar Taxi)-এর তত্ত্বাবধানে এই পরিষেবা সম্পূর্ণ ‘জিরো-কমিশন’ মডেলে চলবে। অর্থাৎ, বহুজাতিক সংস্থাগুলির মতো কমিশন কাটার বদলে এই মডেল চালক এবং যাত্রী— উভয়ের স্বার্থ রক্ষা করবে। অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস (iOS) দুই প্ল্যাটফর্মেই পাওয়া যাবে এই বিশেষ অ্যাপ।
এক নজরে ভারত ট্যাক্সির আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য:
বিশাল নেটওয়ার্ক: ইতিমধ্যেই দিল্লির প্রায় ৫১ হাজারেরও বেশি চালক এই প্ল্যাটফর্মে নাম নথিভুক্ত করেছেন।
বিকল্পের ছড়াছড়ি: শুধু গাড়ি নয়, এই অ্যাপ থেকে অটো-রিকশা এবং বাইক-ট্যাক্সিও বুক করা যাবে।
পকেট-ফ্রেন্ডলি ভাড়া: স্বচ্ছ ভাড়া কাঠামো থাকছে এই অ্যাপে। যাত্রা শুরুর আগে যে আনুমানিক ভাড়া দেখানো হবে, শেষ মুহূর্তে তা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই।
চালকদের আয় বৃদ্ধি: যেহেতু এটি কো-অপারেটিভ মডেল, তাই ভাড়ার প্রায় ৮০ শতাংশ সরাসরি চালকদের পকেটে যাবে। বাকি অংশ যাবে মাসিক ক্রেডিট সিস্টেমের মাধ্যমে।
যাত্রী নিরাপত্তায় জোর: পরিষেবা চালুর আগেই যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা সেরেছে সংস্থাটি।
প্রতিটি চালককে পুলিশের মাধ্যমে ভেরিফিকেশন করিয়েই অ্যাপে যুক্ত করা হচ্ছে।
দিল্লি পুলিশের সঙ্গে বিশেষ কোলাবরেশন থাকছে অ্যাপটির।
রিয়েল-টাইম ট্র্যাকিং এবং বিশ্বস্ত পরিচিতদের সঙ্গে ‘লোকেশন শেয়ারিং’-এর সুবিধা থাকছে।
২৪ ঘণ্টার কাস্টমার সাপোর্ট এবং একাধিক ভাষার ইন্টারফেস থাকছে ব্যবহারের সুবিধার জন্য।
কেন এই অ্যাপ গেম-চেঞ্জার? সাধারণত ওলা-উবেরের মতো সংস্থাগুলি ভাড়ার একটি বড় অংশ কমিশন হিসেবে কেটে নেয়, যার প্রভাব পড়ে চালক ও যাত্রী দুজনের ওপরই। কিন্তু ভারত ট্যাক্সি চালকদের মালিকানাধীন একটি সংস্থা হওয়ায়, এখানে পরিষেবার মান অনেক বেশি উন্নত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই দিল্লির পরিবহন ব্যবস্থায় এই নতুন পরিষেবা সাধারণ মানুষের যাতায়াত কতটা সহজ করে, এখন সেদিকেই তাকিয়ে রাজধানীর বাসিন্দারা।