পাকিস্তান পেল প্রথম CDF! শাহবাজের ‘আপত্তি’ সত্ত্বেও অবশেষে আসিম মুনির দ্বৈত ভূমিকায়, সামরিক প্রভাব চরমে?

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে নিয়ে চলতে থাকা দীর্ঘ জল্পনার অবসান ঘটল। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের প্রথম চিফ অফ ডিফেন্স ফোর্সেস (CDF) হিসেবে নতুন পদে অধিষ্ঠিত হলেন তিনি। এর মাধ্যমে মুনির কার্যত সেনা ও প্রতিরক্ষা—দুই ক্ষেত্রেরই শীর্ষস্থানে উঠে এলেন।

আসিম মুনির প্রথম CDF হওয়ার ফলে তিনি পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক কর্মকর্তায় পরিণত হলেন। এমনিতেই পাকিস্তানে সেনাবাহিনী সরকার পরিচালনা, নির্বাচনী সমীকরণ থেকে শুরু করে নীতি নির্ধারণ—সবেতেই গভীর প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এক ব্যক্তির হাতে সেনা ও প্রতিরক্ষার সর্বোচ্চ ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হওয়ায় পাকিস্তানের বেসামরিক প্রশাসন আরও চাপে পড়বে এবং সামরিক প্রভাব বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে।

জল্পনা ও দর কষাকষি: মুনিরের তিন বছরের সেনাপ্রধানের মেয়াদ ২৯ নভেম্বর শেষ হওয়ার আগেই তাঁকে CDF পদে নিয়োগের জল্পনা শুরু হয়। গুঞ্জন ছিল যে, পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ২৯ নভেম্বরের সময়সীমা এড়াতে ইচ্ছাকৃতভাবে বাহরিন হয়ে লন্ডনে চলে গিয়েছিলেন। প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য তিলক দেবাশে দাবি করেছিলেন, শাহবাজ শরিফ চান না মুনির পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য সেনাপ্রধান এবং CDF হন।

তবে এই সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বৃহস্পতিবার পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেন যে, মুনির সেনাপ্রধানের পদে বহাল থাকছেন এবং পাশাপাশি পাকিস্তানের প্রথম CDF হিসেবেও তিনি দায়িত্ব সামলাবেন। প্রেসিডেন্টের সম্মতির কথা জানিয়ে সরকারি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে।

এদিকে, পাক সরকারের অন্য সূত্রের দাবি, নওয়াজ শরিফ ও তাঁর কন্যা পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মারিয়াম নওয়াজের সঙ্গে দীর্ঘ দর কষাকষির পরই মুনিরের দায়িত্বপ্রাপ্তি নিশ্চিত হয়েছে। রাজনৈতিক মহলে এই তত্ত্ব খানিকটা মান্যতাও পাচ্ছে। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, মুনিরের এই দ্বৈত ভূমিকা পাক শাসনের এমন এক স্তম্ভ তৈরি করেছে, যেখানে তাঁর প্রভাব অস্বীকার করা অসম্ভব। ফলে আগামী দিনে পাকিস্তানের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ও বেসামরিক সরকারের স্বাধীনতা—দু’টোর ওপরেই সেনার নিয়ন্ত্রণ আরও গভীর হতে পারে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy