মুর্শিদাবাদের পর এবার আসানসোল। মঙ্গলবার বিহারীদের শ্রেষ্ঠ উৎসব ছটপুজো চলাকালীন আসানসোলের তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহার নামে ‘নিখোঁজ’ পোস্টারে রাতারাতি চাঞ্চল্য ছড়াল কুলটির বিভিন্ন এলাকায়। দুর্গাপুজো এবং কালীপুজোর সময় থেকেই আসানসোলে অনুপস্থিত শত্রুঘ্ন সিনহা, যাকে ‘বিহারীবাবু’ নামেও ডাকা হয়। ছট উৎসবেও তাঁকে দেখতে না পাওয়ায় দলীয় কর্মী-সহ আসানসোলের বাসিন্দারা হতাশ। তিনি কেন আসছেন না, তার কোনো সরকারি কারণও আসানসোলের মানুষজনকে তিনি জানাননি। এরই মাঝে সোমবার রাতে কুলটি এলাকায় এই পোস্টার ছেয়ে যায়, যা মঙ্গলবার সকাল থেকে চরম রাজনৈতিক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
তৃণমূলের অভিযোগ: ‘বিজেপির কাজ’
সাংসদের নামে নিখোঁজ পোস্টার বিতর্কে তৃণমূলের কুলটি ব্লক সভাপতি কাঞ্চন রায়ের সরাসরি অভিযোগের আঙুল বিজেপির দিকে। তিনি বলেন,
“এসব বিজেপির কাজ। রাজনৈতিকভাবে বিজেপি তৃণমূলের সঙ্গে পেরে উঠছে না, তাই এই ধরনের কাজ করছে। ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে বিজেপির। আর তাই হতাশাগ্রস্থ অবস্থায় বিজেপি এই ধরনের ভুল কাজ করে ফেলছে। বিজেপি যতই এমন কাজ করবে ততই মানুষের থেকে তারা আরও দূরে চলে যাবে।”
বিজেপির পাল্টা দাবি: ‘তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’
অন্যদিকে, তৃণমূলের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে বিজেপি। কুলটির বিজেপি নেতা তথা কুলটির বিধায়ক অজয় পোদ্দারের ছেলে কেশব পোদ্দার পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন:
“বিজেপি এই ধরনের খারাপ কাজ করে না। সম্প্রতি তৃণমূলের পদ নিয়ে তাদের দলের মধ্যেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে। যে পক্ষ পদ পায়নি সাংসদের নামে পোস্টার তারাই দিয়েছেন। দুর্গাপুজো, কালীপুজো-সহ ছটপুজো, কোনও উৎসবেই সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহাকে আসানসোলের মানুষ পায়নি। হতে পারে তিনি অসুস্থ আছেন। ছট মা যেন তাঁকে শারীরিকভাবে সুস্থ রাখেন।”
‘পরিযায়ী সাংসদ’ তকমা
পোস্টার বিতর্ক নিয়ে বলতে গিয়ে আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহাকে সরাসরি ‘পরিযায়ী সাংসদ’ বলে তকমা দিয়েছেন। তিনি বলেন,
“আসানসোল এবং দুর্গাপুরে দুই জায়গাতেই আমরা দু’জন পরিযায়ী সাংসদ পেয়েছি। আমি বহিরাগত তকমা কাউকে দিতে চাই না। কিন্তু মানুষের আনন্দে-দুঃখে কখনও এরা থাকে না। আসানসোলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহাকেও আনন্দ-দুঃখে কোনো সময় পাওয়া যায় না। আসানসোলের মানুষ এবার বুঝুন যে তারা কাকে ভোট দিয়ে সাংসদ বানিয়েছেন।”