রাজ্যে যখন ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য SIR (স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন) প্রক্রিয়া তুঙ্গে, ঠিক তখনই নদীয়ার শান্তিপুরে ফাঁস হলো এক ভয়াবহ জাল সার্টিফিকেট চক্র। অভিযোগ, অর্থের বিনিময়ে রবীন্দ্রনাথ শিশু শিক্ষা কেন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জাল স্কুল সার্টিফিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। এমনকি তৎকালীন সময়ের শিক্ষিকার জাল সই ব্যবহার করে ‘ব্যাক ডেট’-এ তৈরি হচ্ছে এসব নথিপত্র।
ঘটনার সূত্রপাত একটি অপহরণ ও বাল্যবিবাহের অভিযোগকে কেন্দ্র করে। পাঁচপোতা গ্রামের এক নাবালিকা পালিয়ে বিয়ে করলে তার পরিবার শান্তিপুর থানার দ্বারস্থ হয়। সেখানে পুলিশের কাছে একটি সার্টিফিকেট পেশ করা হয় যেখানে মেয়েটিকে ‘সাবালিকা’ দেখানো হয়েছে। অথচ পরিবারের দাবি, মেয়েটির বয়স মাত্র ১৭ বছর। এরপরই তদন্তে নেমে পরিবার জানতে পারে, টাকার বিনিময়ে ওই ভুয়া সার্টিফিকেট তৈরি করা হয়েছে।
কাঠগড়ায় তৃণমূল নেতা ও শিক্ষক
এই চক্রের পাণ্ডা হিসেবে নাম উঠে এসেছে:
আমজাদ শেখ: ওই শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষক। অভিযোগ, তিনি নিজে জাল সার্টিফিকেট দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
আলতাব হোসেন শেখ: স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী তথা প্রভাবশালী নেতা।
তদন্তের স্বার্থে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার প্রতিক্রিয়া নিতে গেলে তিনি মেজাজ হারান। সাংবাদিকদের উত্তর দেওয়ার বদলে উল্টে তাঁদের ‘বিজেপির দালাল’ বলে গালিগালাজ ও হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ।
এই ঘটনা নিয়ে শান্তিপুরে রাজনৈতিক পারদ চড়তে শুরু করেছে।
বিজেপি: গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই জাল চক্রের মাধ্যমে হয়তো বহু অনুপ্রবেশকারীকেও বৈধ নাগরিক সাজানোর চেষ্টা চলছে। তাঁরা অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
তৃণমূল: বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোষ প্রমাণিত হলে দল ব্যবস্থা নেবে।
SIR আবহে এই ধরনের জাল সার্টিফিকেট তৈরির চক্রটি কত গভীরে প্রোথিত এবং এর মাধ্যমে কতজন জালিয়াতি করে সরকারি নথি জোগাড় করেছে, এখন সেটাই দেখার।