দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় উদ্বেগ, ১ লাখেরও বেশি ‘এক-শিক্ষক স্কুল’, ৩৩ লাখের বেশি পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ

নয়াদিল্লি: দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এক উদ্বেগজনক চিত্র উঠে এল কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের প্রকাশিত সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ভারতের ১,০৪,১২৫টিরও বেশি স্কুলে মাত্র একজন করে শিক্ষক রয়েছেন এবং এই স্কুলগুলিতে মোট ৩৩,৭৬,৭৬৯ জন পড়ুয়া পাঠ গ্রহণ করছে। অর্থাৎ, প্রতি স্কুলে গড়ে প্রায় ৩৪ জন শিক্ষার্থী।

এই পরিসংখ্যানটি শিক্ষকের ঘাটতির এক গুরুতর সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করে, যা শিক্ষা অধিকার আইন, ২০০৯ (Right To Education Act, 2009)-এর নীতির পরিপন্থী। এই আইন অনুসারে, প্রাথমিক স্তরে (প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি) শিক্ষার্থী-শিক্ষক অনুপাত (PTR) ৩০:১ এবং উচ্চ প্রাথমিক স্তরে (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি) তা ৩৫:১ হওয়া বাধ্যতামূলক।

কোথায় সমস্যা সবচেয়ে গভীর?

  • সবচেয়ে বেশি স্কুল: একক শিক্ষক পরিচালিত স্কুলের সংখ্যার নিরিখে দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে অন্ধ্র প্রদেশ (১২,৯১২)। এরপর রয়েছে উত্তর প্রদেশ (৯,৫০০-এর বেশি), ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক ও লক্ষদ্বীপ।
  • সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী: তবে, একক-শিক্ষক স্কুলগুলিতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী নথিভুক্ত হয়েছে উত্তর প্রদেশে (৬,২৪,৩২৭)। এরপরে রয়েছে ঝাড়খণ্ড (৪,৩৬,৪৮০), পশ্চিমবঙ্গ (২,৩৫,৪৯৪) এবং মধ্যপ্রদেশ।

সরকারের পদক্ষেপ:

শিক্ষা মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের তুলনায় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে এই ধরনের স্কুলের সংখ্যা প্রায় ৬ শতাংশ কমেছে। এই সমস্যার মোকাবিলায় সরকার ‘স্কুল মার্জার’ বা ‘স্কুল যুক্তিকরণ’ নীতি গ্রহণ করেছে।

এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “একক-শিক্ষক স্কুলগুলি শিক্ষণ-শিখন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে। তাই উপলব্ধ সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে স্কুলগুলির যৌক্তিকীকরণ (rationalisation) এবং একীভূতকরণের মাধ্যমে পঠন-পাঠনের মানোন্নয়নের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও জানান, যেখানে একজনও পড়ুয়া নেই, সেই স্কুলগুলি থেকে শিক্ষকদের বদলি করে একক-শিক্ষক স্কুলগুলিতে পাঠানো হচ্ছে, যাতে শিক্ষকের ঘাটতি পূরণ করা যায়।

কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে দিল্লি-তে এই ধরনের স্কুল রয়েছে ৯টি। তবে পুদুচেরি, লাদাখ, দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ এবং চণ্ডীগড়ে একটিও একক-শিক্ষক স্কুল নেই।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy