দিল্লি থেকে গুজরাত—স্তব্ধ হবে সব খনন কাজ! আরাবল্লি বাঁচাতে মোদী সরকারের ‘মাস্টারস্ট্রোক’

আরাবল্লি পর্বতমালা (Aravalli Range) সংরক্ষণ নিয়ে দীর্ঘদিনের আইনি লড়াই ও বিতর্কের অবসান ঘটাতে বুধবার বড়সড় পদক্ষেপ নিল কেন্দ্রীয় সরকার। সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ের ভুল ব্যাখ্যা সংশোধন করে কেন্দ্রীয় পরিবেশ ও বন মন্ত্রক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, দিল্লি থেকে গুজরাত পর্যন্ত বিস্তৃত এই প্রাচীন পর্বতমালায় নতুন করে কোনো খনির লিজ (Mining Lease) দেওয়া যাবে না। মূলত অবৈধ খনন রুখতে এবং উত্তর ভারতের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করতেই এই কড়া অবস্থান কেন্দ্রের।

কী নিয়ে ছিল বিতর্ক? বিতর্কের মূলে ছিল আরাবল্লির ‘সংজ্ঞা’ ও উচ্চতা। অভিযোগ উঠেছিল, পাহাড়ের ১০০ মিটারের নিচের অংশকে আরাবল্লির বাইরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে খনন কাজ চালানো যায়। তবে কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব আজ সমস্ত ধোঁয়াশা পরিষ্কার করে জানান, ১০০ মিটারের মানদণ্ডটি পাহাড়ের গঠন বোঝানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে, কোনো এলাকাকে বাদ দেওয়ার জন্য নয়। তিনি স্পষ্ট করেন, এনসিআর (NCR) এলাকায় কোনো ধরনের খনন অনুমোদিত নয়।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ব্যাখ্যা: কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ৩৮ নম্বর অনুচ্ছেদে পরিষ্কার বলা হয়েছে যে, অত্যন্ত জরুরি জনস্বার্থ ছাড়া নতুন কোনো খনন লিজ দেওয়া যাবে না। ফরেস্ট সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (FSI)-র রিপোর্ট অনুযায়ী, আরাবল্লিতে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় খনন কাজ চলছে, যা এই পাহাড়কে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে। এই ধ্বংসলীলা রুখতেই বনাঞ্চল রক্ষা ও মরুকরণ ঠেকাতে খনন নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রক।

আরাবল্লির গুরুত্ব বুঝিয়ে মন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, এই পর্বতশ্রেণিতে ২০টি অভয়ারণ্য এবং ৪টি টাইগার রিজার্ভ রয়েছে। তাই কেবল পাথরের স্তূপ হিসেবে নয়, ভারতের বাস্তুতন্ত্রের ফুসফুস হিসেবেই আরাবল্লিকে রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর কেন্দ্রীয় সরকার। এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজস্থান, হরিয়ানা ও গুজরাতের খনি শিল্পে বড় প্রভাব পড়লেও পরিবেশবিদরা একে ঐতিহাসিক জয় হিসেবে দেখছেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy