দিল্লিতে লিভ-ইন পার্টনারকে খুন করে এক তরুণীর গ্রেফতারের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই রাজধানীর কাছে ফরিদাবাদে আরও একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটল। এক বিমা এজেন্টকে খুন করে নর্দমায় দেহ ফেলার অভিযোগে এক মহিলা (লক্ষ্মী) ও তাঁর প্রেমিক (কেশব) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত লক্ষ্মীর দাবি, মৃত ব্যক্তি তাঁকে ব্ল্যাকমেল করছিলেন, তাই তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তাঁরা।
ঘটনার বিবরণ:
রবিবার সকালে ফরিদাবাদের একটি নর্দমা থেকে বিমা এজেন্ট চন্দেরের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কাছেই তাঁর মোটরবাইকটি পাওয়া যায়, যার রেজিস্ট্রেশন নম্বর থেকে মৃতদেহের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। জানা যায়, চন্দের পূর্ব দিল্লির বিনোদ নগরের বাসিন্দা। তাঁর মাথা ও গলায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। চন্দেরের ভাই মদন গোপালের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু হয়।
ব্ল্যাকমেল ও খুনের ষড়যন্ত্র:
তদন্তে নেমে পুলিশ লক্ষ্মী (২৯) ও কেশবকে (২৬) গ্রেফতার করে। পুলিশের মুখপাত্র যশপাল সিং জানিয়েছেন, লক্ষ্মী স্বীকার করেছেন যে তিনি প্রায় পাঁচ বছর ধরে চন্দেরকে চিনতেন। সম্প্রতি তিনি কেশবের সঙ্গে বাগ্দান সারেন। কিন্তু চন্দের এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি এবং লক্ষ্মীকে বিয়ে ভাঙার জন্য হুমকি ও ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করেন। এতে বিরক্ত হয়ে লক্ষ্মী ও কেশব তাঁকে খুন করার পরিকল্পনা করেন।
২৫ অক্টোবর, লক্ষ্মী চন্দেরকে দিল্লির মিঠাপুরে ডেকে পাঠান। চন্দেরের মোটরবাইকে চেপে দু’জনে ফরিদাবাদের আতমাদপুরে একটি জনশূন্য এলাকায় পৌঁছন। সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিল কেশব ও তাঁর দুই বন্ধু। তিনজন মিলে চন্দেরকে গলা টিপে এবং মাথায় আঘাত করে খুন করে। পরে দেহটি নর্দমায় ফেলে পালিয়ে যায় তারা। পুলিশ জানিয়েছে, চন্দেরের পরিচয় গোপন রাখতে পকেট থেকে পরিচয়পত্রগুলি নিয়ে গিয়েছিল অভিযুক্তরা। তবে বাইকের নম্বর থেকে শেষ পর্যন্ত সত্য সামনে আসে। কেশবের দুই সহযোগী এখনও পলাতক, তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
দিল্লির অন্য খুনের ঘটনায় মোড়:
এদিকে, দিল্লিতে প্রেমিককে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া অমৃতা চৌহানকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। জানা গেছে, আগেই তাঁর পরিবার তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল এবং এই বিষয়ে তাঁরা বিজ্ঞাপনও ছাপিয়েছিলেন। অমৃতার পরিবার আদালতে জানিয়েছে, তাঁরা এই ঘটনার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চান না।
তদন্তে উঠে এসেছে যে, বিএসসি ফরেন্সিক সায়েন্সের ছাত্রী হওয়ার সুবাদে অমৃতা তাঁর শিক্ষার জ্ঞান ব্যবহার করেই এমনভাবে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন যাতে তা পুলিশের কাছে ‘দুর্ঘটনা’ বলে মনে হয়। তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক এলপিজি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটর ছিলেন, ফলে গ্যাস সিলিন্ডার সংক্রান্ত জ্ঞানও তাঁর পরিকল্পনায় কাজে লাগে।