২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এখন থেকেই রণকৌশল সাজাতে শুরু করল তৃণমূল কংগ্রেস। সংগঠনকে আরও মজবুত করতে এবং নিচুতলার খবরের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে এবার জেলাভিত্তিক শতাধিক কো-অর্ডিনেটর নিয়োগ করল জোড়াফুল শিবির। একসময় দলে ‘অবজার্ভার’ বা পর্যবেক্ষক পদটি যেভাবে কাজ করত, অনেকটা সেই আদলেই এই কো-অর্ডিনেটরদের নিয়োগ করা হয়েছে। তৃণমূলের অন্দরের খবর অনুযায়ী, এই কো-অর্ডিনেটররা মূলত দলের ‘চোখ ও কান’ হিসেবে কাজ করবেন এবং সরাসরি শীর্ষ নেতৃত্বকে রিপোর্ট পাঠাবেন।
তৃণমূলের প্রকাশিত এই তালিকায় একাধিক চমক রয়েছে। উত্তর কলকাতায় কুণাল ঘোষকে জোড়াসাঁকো ও চৌরঙ্গী বিধানসভার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে সবথেকে বড় চমক মেদিনীপুরের রাজনীতিতে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর খাসতালুক নন্দীগ্রামে সংগঠনের হাল ধরতে নিয়োগ করা হয়েছে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। একদা শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ রাজীবকে তাঁর বিরুদ্ধেই ঘুঁটি হিসেবে সাজানো রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
দলের এই নতুন পদক্ষেপে স্পষ্ট যে, গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে যে জায়গাগুলোতে সংগঠন কিছুটা দুর্বল ছিল, সেখানে নতুন রক্ত সঞ্চালন করতে চাইছে হাইকম্যান্ড। জেলা সভাপতি এবং ব্লক সভাপতিদের কাজের ওপর নজরদারির পাশাপাশি গোষ্ঠীকোন্দল মেটানোও হবে এই শতাধিক কো-অর্ডিনেটরের অন্যতম প্রধান কাজ। মূলত অভিষেকের ‘নতুন তৃণমূল’ গড়ার লক্ষ্যেই এই প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক কাঠামোর পরিবর্তন আনা হয়েছে। ২৬-এর যুদ্ধের আগে এই নতুন টিম কতটা সফল হয়, এখন সেটাই দেখার।