টাকা ইনকাম করলেও লাগে না ১ টাকাও ট্যাক্স! ভারতের এই রাজ্যে গেলে দিতে হয় না ইনকাম ট্যাক্স, জানুন রহস্য

সারা দেশে যখন আয়করের ঊর্ধ্বসীমা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা দুশ্চিন্তা থাকে, ঠিক তখনই ভারতের বুকেই এমন একটি রাজ্য রয়েছে যেখানে উপার্জন করলেও ইনকাম ট্যাক্স বা আয়কর দিতে হয় না। আয়কর আইনের সেকশন ১০ (২৬এএএ)-এর অধীনে এই বিশেষ সুযোগ পান হিমালয়ের কোলের রাজ্য সিকিমের ভূমিপুত্ররা।

এই সুবিধা পাওয়ার নেপথ্যে রয়েছে এক ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট। ১৯৭৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিকিম আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের অংশ হয়। সেই সময় অন্তর্ভুক্তির শর্ত অনুযায়ী, সিকিমের আদি বাসিন্দাদের নিজস্ব কিছু অধিকার ও অর্থনৈতিক সুরক্ষা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এই সাংবিধানিক রক্ষাকবচের ফলেই সিকিমের ভূমিপুত্ররা আয়কর থেকে মুক্তি পান।

কারা এই সুবিধার যোগ্য?
মনে রাখবেন, সিকিমে বসবাস করলেই কিন্তু আপনি ট্যাক্স ছাড় পাবেন না। আয়কর আইন অনুযায়ী শুধুমাত্র এই নির্দিষ্ট ব্যক্তিরাই ছাড় পাওয়ার যোগ্য:

আদি বাসিন্দা: যাঁরা ১৯৭৫ সালের ২৬ এপ্রিলের আগে থেকেই সিকিমের বাসিন্দা হিসেবে নথিবদ্ধ।

সার্টিফিকেট: যাঁদের কাছে ‘সিকিম সাবজেক্ট সার্টিফিকেট’ (Sikkim Subject Certificate) রয়েছে।

উত্তরাধিকার: সেই সব নথিভুক্ত ব্যক্তিদের পরবর্তী প্রজন্মও এই করমুক্ত সুবিধার আওতায় পড়বেন।

সতর্কবার্তা: ১৯৭৫ সালের পর ভারত বা বিশ্বের অন্য কোনো প্রান্ত থেকে যাঁরা সিকিমে গিয়ে স্থায়ী হয়েছেন, তাঁরা কিন্তু এই বিশেষ নিয়মের সুবিধা পাবেন না। তাঁদের সাধারণ ভারতীয় নাগরিকদের মতোই আয়কর দিতে হবে।

সিকিমের যোগ্য বাসিন্দাদের জন্য মূলত তিনটি ক্ষেত্রে আয়কর মকুব করা হয়েছে: ১. ব্যবসা: সিকিমের সীমানার মধ্যে করা যেকোনো ব্যবসার আয়। ২. চাকরি: সিকিম রাজ্যের ভেতরে প্রাপ্ত বেতন। ৩. বিনিয়োগ: ডিভিডেন্ড (Dividend) অথবা সিকিউরিটিজের সুদ থেকে প্রাপ্ত আয়।

একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত: যদি সিকিমের কোনো ভূমিপুত্র রাজ্যের বাইরে (যেমন দিল্লি বা কলকাতা) কোনো সম্পত্তি বা ব্যবসা থেকে আয় করেন, তবে তাঁকে দেশের সাধারণ কর কাঠামো মেনেই ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে হবে।

ভূমিপুত্রদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দিতেই সংবিধানের এই বিশেষ ব্যবস্থা। তাই সিকিমে ব্যবসা বা স্থায়ীভাবে বসবাসের কথা ভাবলে এই আইনি সূক্ষ্মতাগুলি আগে জেনে নেওয়া জরুরি।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy