জন্ম-মৃত্যু সনদের জালিয়াতি বন্ধ! আধার-ভিত্তিক সমস্ত সন্দেহজনক সার্টিফিকেট অবিলম্বে বাতিল করার নির্দেশ, FIR দায়েরের ঘোষণা

জন্ম ও মৃত্যু সনদের ক্রমবর্ধমান জাল ব্যবহার বন্ধে এবার কড়া পদক্ষেপ নিল মহারাষ্ট্র সরকার। মহারাষ্ট্রের রাজস্বমন্ত্রী চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে রাজ্যব্যাপী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আধার কার্ডের ভিত্তিতে জারি করা সমস্ত সন্দেহজনক শংসাপত্র অবিলম্বে বাতিল করার এবং জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পুলিশ এফআইআর (FIR) দায়েরের নির্দেশ দিয়েছেন।

রাজস্ব বিভাগ এই বিষয়ে সমস্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, মহকুমা কর্মকর্তা এবং তহসিলদারদের কাছে একটি বিস্তারিত ১৬-দফা নির্দেশিকা পাঠিয়েছে।

কঠোর ব্যবস্থার মূল নির্দেশিকা:
রাজস্ব বিভাগের নির্দেশনায় জালিয়াতি বন্ধে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে:

আধার প্রমাণের বৈধতা: কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ম অনুসারে, আধার কার্ডকে জন্ম তারিখ বা জন্মস্থানের একমাত্র প্রমাণ হিসাবে বিবেচনা করা যাবে না—এই বিষয়ে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে। শুধুমাত্র আধারের ভিত্তিতে জারি করা শংসাপত্রগুলি ভুল বলে বিবেচিত হবে এবং বাতিল করা হবে।

সংশোধিত আদেশের বাতিল: ১১ আগস্ট, ২০২৩ সালের সংশোধনীর পরে নায়েব তহসিলদারদের দ্বারা জারি করা সমস্ত জন্ম/মৃত্যু নিবন্ধন আদেশ বাতিল করা হবে এবং পুনরায় যাচাই করা হবে।

আইনি পদক্ষেপ: আবেদনপত্রে জন্ম তারিখ এবং আধার কার্ডের মধ্যে কোনও অসঙ্গতি পাওয়া গেলে, তাৎক্ষণিকভাবে একটি এফআইআর দায়ের করা হবে।

পলাতক ঘোষণা: যেসব সুবিধাভোগী জাল শংসাপত্র জমা দিতে ব্যর্থ হবেন বা নিখোঁজ থাকবেন, তাদের পলাতক ঘোষণা করা হবে।

যাচাইকরণ শিবির: জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং বিভাগীয় কমিশনারদের তত্ত্বাবধানে বিশেষ যাচাইকরণ শিবির আয়োজন করা হবে।

১৪টি জেলায় বিশেষ নজরদারি
সরকারি সুবিধা দখল, জমি দখল, এমনকি জাতীয় নিরাপত্তার মতো গুরুতর কাজেও জাল শংসাপত্র ব্যবহার হচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রাজস্বমন্ত্রী। তিনি এই ধরণের চক্রান্ত সহ্য করা হবে না বলে জানিয়েছেন।

এই জালিয়াতির হটস্পট হিসেবে ১৪টি জেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে কঠোর তদন্ত শুরু হয়েছে: অমরাবতী, আকোলা, সিলোড, সম্ভাজিনগর শহর, লাতুর, অঞ্জনগাঁও সুরজি, অচলপুর, পুসাদ, পারভানি, বিড, গেভরাই, জালনা, অর্ধপুর এবং পার্লি।

রাজস্বমন্ত্রী বাওয়ানকুলে বলেন, “জাল জন্ম ও মৃত্যু সনদ ব্যবহার করে সিস্টেমকে প্রতারণা করা হচ্ছে। সরকার জিরো-টলারেন্স নীতি গ্রহণ করবে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। ২০২৩ সালের পরে জারি করা সমস্ত সন্দেহজনক শংসাপত্র তদন্ত না করা এবং জাল প্রমাণিত হলে বাতিল না করা পর্যন্ত এই বিশেষ অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy