ঝাড়গ্রামের ‘পরিবর্তন সংকল্প সভা’ থেকে আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে বেনজির আক্রমণ শানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। জঙ্গলমহলের পবিত্র মাটিতে দাঁড়িয়ে তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, ২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক বদল এলেও জঙ্গলমহলের মানুষের ভাগ্যের কোনো ‘আসল পরিবর্তন’ হয়নি। বরং শোষণের ধরণ বদলেছে মাত্র। কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে নিরাপত্তা— প্রতিটি ক্ষেত্রেই জঙ্গলমহল আজ বঞ্চিত বলে দাবি করেন তিনি।
এদিন শুভেন্দুর ভাষণে সবথেকে চাঞ্চল্যকর ছিল জ্ঞানেশ্বরী নাশকতার প্রসঙ্গ। অতীতে ঘটে যাওয়া সেই ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার স্মৃতি উস্কে দিয়ে তিনি সরাসরি ছত্রধর মাহাতোকে আক্রমণ করেন। শুভেন্দুর দাবি, পুলিশ এবং প্রশাসনের একাংশের মদতেই সেদিন জঙ্গলমহলে অশান্তি জিইয়ে রাখা হয়েছিল। এমনকি কলকাতার বর্তমান নগরপালকে নিয়েও বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি। বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, শাসকদলের অঙ্গুলিহেলনে পুলিশ আধিকারিকরা কাজ করছেন, যার ফলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।
শুভেন্দু অধিকারী এদিন সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, “জঙ্গলমহলের মানুষ শান্তিতে নেই। দিদিমণি যে পরিবর্তনের কথা বলেছিলেন, তা আজ কুশাসনে পরিণত হয়েছে।” ছত্রধর মাহাতোর জেলমুক্তি এবং পরবর্তী রাজনৈতিক উত্থান নিয়েও শাসকদলকে বিঁধতে ছাড়েননি তিনি। শুভেন্দুর দাবি, মাওবাদী আন্দোলনের নাম করে যাদের ওপর অন্যায় হয়েছে, তারা আজও বিচার পায়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আসন্ন পুরসভা ও পঞ্চায়েত ভোটের আগে জঙ্গলমহলে বিজেপির সংগঠনকে চাঙ্গা করতেই শুভেন্দুর এই ‘সংকল্প সভা’। এদিনের সভা থেকে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, আগামী নির্বাচনে জঙ্গলমহলের ভোটব্যাঙ্ক পুনর্দখল করাই তাঁর প্রধান লক্ষ্য। তৃণমূলের দুর্নীতির খতিয়ান তুলে ধরার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা কেন সাধারণ মানুষ পাচ্ছেন না, সেই প্রশ্নও এদিন সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরেন শুভেন্দু।