ভারত তার প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধন করেছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক (Ministry of Defence) ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা ‘ধারাশক্তি’ ইন্টিগ্রেটেড ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার (EW) সিস্টেমের গণ-উৎপাদনকে অনুমোদন দিয়েছে। ₹৫১,৫০০ কোটি টাকার এই বিশাল প্রকল্পটি ভারতের ইলেকট্রনিক যুদ্ধ ক্ষমতাকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
ধারাশক্তির মূল কাজ
‘ধারাশক্তি’ সিস্টেমটি শত্রুর ইলেকট্রনিক সংকেতকে প্রতিহত করতে এবং জ্যাম করতে সক্ষম। এটি শত্রুর যোগাযোগ এবং রাডার সিস্টেমকে ব্যাহত করতে পারে, একই সাথে ভারতীয় যোগাযোগ লাইনগুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সিস্টেম চীন এবং পাকিস্তানের মতো দেশের সিগনাল মনিটরিং ক্ষমতাকে কার্যকরভাবে প্রতিহত করবে।
এই সিস্টেমটি মরুভূমি এবং সমতল ভূমিতে, যেমন সমঘাট (Samghat) এবং শত্রুঘাট (Shatrughat) সেক্টরে মোতায়েনের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যেখানে দূরপাল্লার অপারেশন এবং নজরদারি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য
‘ধারাশক্তি’-এর প্রধান শক্তি হল উচ্চ তাপমাত্রা এবং উন্মুক্ত অঞ্চলে দক্ষতার সাথে কাজ করার ক্ষমতা। এতে দুটি প্রধান মডিউল রয়েছে:
১. কম (COM) মডিউল: এটি শত্রুর রেডিও সিগনাল ক্যাপচার, বিশ্লেষণ এবং ব্যাহত করে। ২. নন-কম (Non-COM) মডিউল: এটি রাডার সিগনাল শনাক্তকরণ, জ্যামিং এবং ইলেকট্রনিক কাউন্টার-মেজার্স (ECM)-এর মাধ্যমে শত্রুর সিস্টেমকে অন্ধ করে দেয়।
এছাড়াও, এই সিস্টেমে দিন ও রাতের বেলা শত্রুর গতিবিধি নিরীক্ষণের জন্য উচ্চ-রেজোলিউশন ক্যামেরা এবং ইনফ্রারেড সেন্সর সহ একটি ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল (EO) স্যুট রয়েছে।
নিরাপদ যোগাযোগ এবং আত্মনির্ভর ভারত
‘ধারাশক্তি’ সিস্টেম ভারতীয় বাহিনীর জন্য অবিচ্ছিন্ন এবং সুরক্ষিত যোগাযোগ নিশ্চিত করে। এটি এমন প্রযুক্তিতে কাজ করে যা হস্তক্ষেপ থেকে সুরক্ষিত। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই সিস্টেম মোতায়েন ভারতের সীমান্তে ইলেকট্রনিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করবে, যা কৌশলগত এবং কৌশলগত উভয় স্তরেই ভারতীয় সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করবে।
প্রতিরক্ষা অধিগ্রহণ পরিষদ (Defence Acquisition Council) কর্তৃক অনুমোদিত এই প্রকল্পটি ভারতের ‘আত্মনির্ভর ভারত’ মিশনের দিকে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ, যা দেশের দেশীয় প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিকে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি দেবে। (সূত্র: News18)