হাড়ভাঙা খাটুনি শেষে যখন ফসল গোলায় তোলার সময়, ঠিক তখনই নেমে এল চরম বিপর্যয়। উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের বিশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম খেজুরঘড়িয়ায় ধানের স্তূপে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল এক বিঘা জমির ফসল। এই ঘটনায় এলাকার কৃষক মহলে যেমন শোকের ছায়া নেমেছে, তেমনই বাড়ছে চাপা উত্তেজনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম খেজুরঘড়িয়া এলাকার রাস্তার ধারে এক বিঘা জমির ধান কেটে স্তূপ করে রাখা ছিল। বৃহস্পতিবার আচমকাই সেই স্তূপে আগুন লেগে যায়। শুকনো ধান হওয়ায় মুহূর্তের মধ্যে লেলিহান শিখা গ্রাস করে নেয় সম্পূর্ণ ফসল। এলাকার বাসিন্দা ও ‘সব্যসাচী ক্লাবে’র সদস্যরা দ্রুত ছুটে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। চোখের সামনেই পুড়ে ছাই হয়ে যায় সোনালি ফসল।
জমির মালিক কৌশিক মণ্ডল এই অগ্নিকাণ্ডকে কোনো দুর্ঘটনা হিসেবে মানতে নারাজ। তাঁর অভিযোগ, এটি কোনো ইলেকট্রিক শর্ট সার্কিট নয়, বরং কেউ পরিকল্পিতভাবে বা আক্রোশবশত ধানে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। কৌশিকবাবু পাশের গ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় খবর পেয়ে যখন পৌঁছান, ততক্ষণে সব শেষ। তিনি বলেন, “আমি এক ফসলী চাষি। সারা বছরের খোরাকি ছিল এই ধান। এখন আমি আর আমার পরিবার কী খাব? সব অনিশ্চিত হয়ে গেল।”
ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় প্রশাসনের আধিকারিকরা। এক বিঘা জমির ধান হারিয়ে কার্যত পথে বসেছেন ওই কৃষক। তিনি এখন সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। অন্যদিকে, হিঙ্গলগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগিয়ে থাকলে তাকে খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।
এই ঘটনার পর স্থানীয় চাষিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। খেত থেকে ধান কাটার পর তা নিরাপদে গোলায় তোলা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন কৃষিজীবী মানুষজন।