উত্তরবঙ্গ সফরে মালদহের গাজলে এক জনসভা থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবারও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে চরম বঞ্চনার অভিযোগ তুললেন। তবে অভিযোগের সঙ্গেই তিনি রাজ্য সরকারের অন্যতম প্রধান প্রকল্প ‘বাংলার বাড়ি’ নিয়ে বড় ঘোষণা করলেন।
১ কোটি মানুষকে বাড়ি দিয়েছে রাজ্য:
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাংলার বাড়ি প্রকল্পে এই রাজ্যের প্রায় ১ কোটি মানুষকে আমরা বাড়ি করে দিয়েছি।” তিনি আরও ঘোষণা করেন, জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই এই প্রকল্পের অধীনে আরও ১৬ লক্ষ উপভোক্তা তাঁদের প্রথম কিস্তির টাকা পেয়ে যাবেন। বাংলার বাড়ি প্রকল্পের পাশাপাশি তিনি ‘চা সুন্দরী’-র অধীনেও চা শ্রমিকদের জন্য বাড়ি তৈরির প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন।
জনতার উদ্দেশে ভাষণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানান, তিনি ভোট চাইতে আসেননি, বরং মানুষের পাশে দাঁড়াতে এসেছেন। তিনি রাজ্যের মা-বোনেদের স্বনির্ভরতার উপর জোর দিয়ে বলেন, “আমার মা বোনেরা দেশের গর্ব। যে সংসার মায়েরাই গুছিয়ে নেয়, সেই সংসারই সুখের হয়।”
কেন্দ্রকে খোঁচা: ‘গণতান্ত্রিকভাবে দখল করো’
কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ ওঠার পরই মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, “দখল করো গণতান্ত্রিকভাবে। জোর করে দখল করতে চাইলে জরুরি অবস্থার মতো হয়। আর যদি জরুরি অবস্থা করেন, তাহলে মানুষ আপনাদের ক্ষমা করবেন না।”
নদী ভাঙন ও স্বাস্থ্য পরিষেবা:
বঞ্চনার অভিযোগের পাশাপাশি রাজ্যের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির উল্লেখ করে তিনি জানান, রাজ্যে তাঁদের সরকারের ৯৪টি স্কিম চালু আছে। এর সঙ্গে সদ্য চালু হওয়া মোবাইল স্বাস্থ্য পরিষেবা ইউনিটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই পরিষেবার মাধ্যমে মাত্র সাত দিনে ১ লক্ষ মানুষ সুবিধা পেয়েছেন।
একইসঙ্গে তিনি মালদা-মুর্শিদাবাদে নদী ভাঙন সমস্যা নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ দাগেন। তিনি অভিযোগ করেন, ফারাক্কা ড্রেজিং না করার কারণেই ২০০৫ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ১০৭৩ হেক্টর জমি নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, কেন্দ্র এই বিষয়ে কিছু না করায় রাজ্য সরকার নদী ভাঙন রোধের জন্য ২০০ কোটি টাকা দিয়েছে।