এসএসসি-তে ফের বড়সড় ‘সাফাই’ অভিযান! ভেরিফিকেশনে ধরা পড়ল ১৩২৭ জন ‘দাগি’, তুঙ্গে শোরগোল

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির ক্ষত এখনও দগদগে। তার মধ্যেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) ভেরিফিকেশন পর্বে উঠে এল এক নজিরবিহীন তথ্য। নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশের নিয়োগ প্রক্রিয়ার নথিপত্র যাচাই করতে গিয়ে কমিশন হাতেনাতে ধরল ১ হাজার ৩২৭ জন অযোগ্য প্রার্থীকে। তথ্যে কারচুপি করে এরা ইন্টারভিউয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেলেও শেষরক্ষা হলো না।

কেন বাদ পড়ল এই বিশাল সংখ্যা? এসএসসি সূত্রে খবর, ৩৫টি ভিন্ন বিষয়ের ওপর পরীক্ষা দেওয়া এই প্রার্থীদের তালিকায় মূলত তিনটি বড় জালিয়াতি ধরা পড়েছে:

ভুল শিক্ষাগত যোগ্যতা: অনেকের দেওয়া অ্যাকাডেমিক রেকর্ড বা কাজের অভিজ্ঞতার সঙ্গে আসল নথির কোনও মিল নেই।

ভুয়ো কাস্ট সার্টিফিকেট: সংরক্ষণের সুবিধা নিতে অনেক প্রার্থীই জাল জাতিগত শংসাপত্র জমা দিয়েছিলেন।

পুরাতন ‘দাগি’: সবথেকে অবাক করা বিষয় হলো, এই তালিকার মধ্যে এমন অনেকে আছেন যারা ২০১৬ সালের নিয়োগ দুর্নীতির মামলাতেও ‘অযোগ্য’ বা ‘দাগি’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিলেন। সেই কালো তালিকাভুক্ত প্রার্থীরাও এবার ফাঁক গলে ভেরিফিকেশনে পৌঁছে গিয়েছিলেন।

সেই ‘নীতীশরঞ্জন’ ও ব্যক্তিগত আক্রোশ: এই ১৩২৭ জনের মধ্যে সবথেকে বেশি চর্চা হচ্ছে নীতীশরঞ্জন বর্মনের নাম নিয়ে। ২০১৬ সালের প্যানেলে তাঁর নাম দাগি তালিকায় থাকলেও তিনি এবারও ভেরিফিকেশনের ডাক পান। চাঞ্চল্যকর বিষয় হলো, নীতীশের স্ত্রী (যাঁর সঙ্গে বিচ্ছেদের মামলা চলছে) নিজেই আইনজীবী ফিরদৌস শামিমকে ফোন করে তাঁর স্বামীর কারচুপির কথা ফাঁস করে দেন। বিষয়টি আদালতে পৌঁছাতেই হাইকোর্ট তাঁর নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের নির্দেশ দেয়।

ইন্টারভিউ নিয়ে সংশয়: এত বিপুল সংখ্যক প্রার্থীর তথ্য যাচাই করতে গিয়ে কমিশন হিমশিম খাচ্ছে। ফলে এসএসসির নবম-দশমের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া নির্দিষ্ট ডেডলাইনের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে একাদশ-দ্বাদশের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া ডিসেম্বরের শেষেই শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কমিশন।

এই ১৩২৭ জনের নাম ইতিমধ্যেই কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে মুছে ফেলা হয়েছে এবং তারা কোনওভাবেই এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না। কমিশনের এই কড়া পদক্ষেপে প্রকৃত যোগ্য প্রার্থীদের মনে আশার আলো দেখা দিলেও, জালিয়াতির জাল কতটা গভীরে তা নিয়ে ফের উঠছে প্রশ্ন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy