রাজ্যে বিশেষ সংশোধনী তালিকা (Special Intensive Revision – SIR) প্রক্রিয়া নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের মূল অভিযোগ, জাতীয় নির্বাচন কমিশন (Election Commission) একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে খুশি করতে যে কাজ সাধারণত দু’বছরে শেষ করার কথা, তা মাত্র দু’মাসে পরিকল্পনাহীনভাবে সেরে ফেলতে চাইছে। এই অভিযোগ জানাতে কয়েকদিন আগে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দপ্তরে গিয়েছিল।
তৃণমূলের অভিযোগের জবাব চাইল কমিশন
তৃণমূলের এই গুরুতর অভিযোগগুলির ভিত্তিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে এবার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন সরাসরি রাজ্যের সিইও দপ্তরের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে।
মঙ্গলবার কমিশনের দিল্লি দপ্তর থেকে ফোন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়।
সূত্রের খবর, সিইও দপ্তর জানিয়েছে তৃণমূলের পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে তিনটির জবাব দেওয়া হয়েছে, বাকি দু’টি এখনও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সিইও-র কাছে তৃণমূলের মূল অভিযোগ কী ছিল?
অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও পার্থ ভৌমিক সহ তৃণমূলের প্রতিনিধি দল সিইও মনোজকুমার আগরওয়ালের সঙ্গে দেখা করে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছিল। তাঁদের প্রধান অভিযোগগুলি ছিল:
প্রশিক্ষণহীনতা: বিএলও-দের (BLO) কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়াই এসআইআর-এর কাজে নামানো হয়েছে, ফলে কাজ করতে গিয়ে তাঁরা সমস্যায় পড়ছেন।
কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়া: নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে না পারলে যেন কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, সেই আর্জিও জানায় তৃণমূল।
বাকি অভিযোগ: সিইও দপ্তর জানিয়েছে, বাকি দু’টি অভিযোগের মধ্যে কিছু বিরোধী নেতার বিরুদ্ধেও অভিযোগ ছিল, যা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দিল্লিতে কমিশনকে তৃণমূলের পাঁচ প্রশ্ন
সিইও দফতরে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি তৃণমূলের দশ সদস্যের প্রতিনিধি দল দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের সঙ্গে দেখা করে। সেখানেও তারা কমিশনের (Election Commission) কাছে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলে, যার কোনও জবাব কমিশন দিতে পারেনি বলে তৃণমূলের দাবি।
তৃণমূলের সেই পাঁচটি প্রশ্ন ছিল:
১. অসমের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে কেন এসআইআর করা হচ্ছে না? ২. ২০২৪ সালের ভোটার তালিকায় যদি অবৈধ ভোটার ছিল, তাহলে সেই ভোটে নির্বাচিত সরকার কীভাবে ক্ষমতায় রইল? ৩. বিজেপি বলছে এক কোটি নাম বাদ যাবে— এ তথ্য কোথা থেকে পেল তারা? কমিশন কি তথ্য দিচ্ছে? ৪. তৃণমূলের গুরুতর অভিযোগে ব্যবস্থা হয় না, বিজেপির সামান্য অভিযোগেই কেন দ্রুত পদক্ষেপ? ৫. বিএলও-দের মৃত্যু হলে দায় নেবে কি নির্বাচন কমিশন?
কমিশনের কাছে তৃণমূলের এই প্রশ্নগুলি এখন রাজনৈতিক মহলে নতুন করে তর্ক-বিতর্ক শুরু করেছে।