বাংলাদেশের রাজনীতির আকাশে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের পতন ঘটল। দীর্ঘ রোগভোগের পর ৮০ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার সকালে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁর প্রয়াণের খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা বাংলাদেশে। এই অপূরণীয় ক্ষতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে সাত দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর আবেগঘন বার্তা বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার নিজের এক্স (X) হ্যান্ডেলে শোকবার্তায় মোদী লিখেন, খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের এক বলিষ্ঠ নেত্রী এবং ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীর অন্যতম কারিগর। ২০১৫ সালে ঢাকা সফরকালে খালেদা জিয়ার বাসভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে হওয়া সেই ঐতিহাসিক বৈঠকের স্মৃতি আজও অমলিন বলে জানান মোদী। শোকসন্তপ্ত পরিবার ও বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন, “ঈশ্বর যেন এই শোক সহ্য করার শক্তি দেন।” উল্লেখ্য, ডিসেম্বরের শুরুতেই খালেদার অসুস্থতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিলেন মোদী।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এক লড়াকু চরিত্র তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিএনপি-র পক্ষ থেকে এক জরুরি সাংবাদিক বৈঠক করা হয়। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি কেবল একটি দলের নয়, বরং গোটা জাতির ক্ষতি। বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং নারী শিক্ষার প্রসারে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। ড. ইউনূস তাঁর শোকবার্তায় জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের রাজনীতির অন্যতম পথপ্রদর্শক।
বছরের শেষে এসে বাংলাদেশের এই রাজনৈতিক শূন্যতা কেবল ওপার বাংলা নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতেই এক বড়সড় পরিবর্তন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আগামী সাত দিন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।