১০০ দিনের কাজ সংক্রান্ত মামলায় সোমবার সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকার জোর ধাক্কা খাওয়ার পর এবার কলকাতা হাইকোর্টে বিচারাধীন বাকি মামলাগুলির দ্রুত শুনানির আর্জি জানালেন ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের আইনজীবীরা। মঙ্গলবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই আর্জি জানানো হয়।
সোমবার দেশের শীর্ষ আদালত কেন্দ্রকে পশ্চিমবঙ্গে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা অবিলম্বে মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশের পরেই সংশ্লিষ্ট মামলার নিষ্পত্তির জন্য তৎপরতা শুরু হয়েছে।
৭ নভেম্বর মামলার শুনানি
মঙ্গলবার ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের আইনজীবীরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল ও বিচারপতি স্মিতা দাস দে’র ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তাঁরা জানান, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর কলকাতা হাইকোর্টে ১০০ দিনের কাজ সংক্রান্ত বেশ কিছু মামলার শুনানি বাকি রয়েছে। এই মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা প্রয়োজন।
বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চ আইনজীবীদের আর্জি শুনে আগামী ৭ নভেম্বর মামলাগুলোর শুনানির আশ্বাস দিয়েছে।
কেন্দ্রের আর্জি খারিজ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট
প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ কেন্দ্রকে ১ অগস্ট থেকে পশ্চিমবঙ্গে ১০০ দিনের কাজ শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে ৩১ জুলাই সুপ্রিম কোর্টে আপিল দায়ের করে।
সোমবার, অর্থাৎ ২৭ অক্টোবর, বিচারপতি বিক্রম নাথ ও বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে, তারা হাইকোর্টের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করবে না। কেন্দ্র নিজেরাই মামলা তুলে না-নিলে সুপ্রিম কোর্ট মামলা খারিজ করে দেবে বলে জানানো হয়। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রকে ধাক্কা দিয়ে মামলা খারিজ করে দেয় দেশের শীর্ষ আদালত।
কেন্দ্র-রাজ্য দড়ি টানাটানি, অবশেষে স্বস্তি খেটে খাওয়া মানুষের
মহাত্মা গান্ধি রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি স্কিম (MGNREGS) প্রকল্পে বিপুল দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে রাজ্যের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয় কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। এরপর কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে দোষারোপ ও আইনি তরজা শুরু হয়। দু’পক্ষের এই দড়ি টানাটানিতে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ বছরের পর বছর বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশে তাঁদের কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলল।
এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “এই রায় বাংলার মানুষের সম্মানের জয়।” এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্রুত নিষ্পত্তির দিকে তাকিয়ে আছেন বাংলার ২.৫৮ কোটি জব কার্ডধারী মানুষ।