‘অশ্লীল ভিডিও মুছে দিতে চাননি প্রেমিক’, লিভ-ইন পার্টনারকে পুড়িয়ে মারার পর ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হল বহু মহিলার ব্যক্তিগত ভিডিও

উত্তর দিল্লিতে ৩২ বছর বয়সী এক ইউপিএসসি (UPSC) পরীক্ষার্থীকে তাঁর লিভ-ইন পার্টনার দ্বারা পুড়িয়ে হত্যা করার কয়েক সপ্তাহ পর পুলিশ তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য উদ্ঘাটন করল। পুলিশ মৃত ব্যক্তির ফ্ল্যাট থেকে একটি হার্ড ডিস্ক (Hard Disk) উদ্ধার করেছে, যাতে ১৫ জনেরও বেশি মহিলার ব্যক্তিগত ভিডিও ছিল।

হার্ড ডিস্কে ১৫+ মহিলার ভিডিও:

পুলিশ জানিয়েছে, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা এই ভিডিওগুলির বিষয়বস্তু পরীক্ষা করছেন। এর মাধ্যমে মহিলাদের শনাক্ত করার এবং ভিডিওগুলি তাঁদের সম্মতিতে রেকর্ড করা হয়েছিল কি না, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

হিন্দুস্তান টাইমসকে একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন:

‘‘মনে হচ্ছে মৃত ব্যক্তি একাধিক মহিলার সঙ্গে একই কাজ করেছিলেন এবং তাঁদের ব্যক্তিগত ভিডিও নিজের ল্যাপটপে রেকর্ড করতেন। ল্যাপটপটি এখনও উদ্ধার করা হয়নি তবে হার্ডডিস্কটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে এবং এতে ১৫ জনেরও বেশি মহিলার ভিডিও রয়েছে।’’

হত্যার পটভূমি:

ঘটনা: গত ৬ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে উত্তর দিল্লির তিমারপুরে নিজের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ওই ৩২ বছর বয়সী ব্যক্তির পোড়া দেহ উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক মামলা: প্রাথমিকভাবে পুলিশ আগুন নিয়ে অবহেলার ধারায় মামলা দায়ের করলেও, পরবর্তী তদন্তে জানা যায় যে এটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যা।

খুনের কারণ: জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ২১ বছর বয়সী বিএসসি ফরেনসিক বিজ্ঞানের ছাত্রী (মোরাদাবাদের বাসিন্দা) যখন জানতে পারেন যে তাঁর প্রেমিক গোপনে তাঁর অশ্লীল ভিডিও রেকর্ড করেছেন এবং অনুরোধ করা সত্ত্বেও সেগুলি মুছে ফেলতে অস্বীকার করেন, তখনই তিনি তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

ফরেনসিক জ্ঞান খাটিয়ে ছক:

এই মামলায় প্রধান অভিযুক্ত মহিলা, তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক এবং অন্য একজন পুরুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রধান অভিযুক্ত মহিলা তাঁর ফরেনসিক বিজ্ঞানের পটভূমি এবং অপরাধমূলক অনুষ্ঠানের প্রতি আগ্রহ কাজে লাগিয়ে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।

হত্যার বিবরণ: ৫ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখ রাতে মহিলাটি তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক, একজন এলপিজি গ্যাস পরিবেশক এবং একজন সহযোগীর সঙ্গে মৃতের ফ্ল্যাটে যান বলে অভিযোগ। তিনজন মিলে ওই ব্যক্তিকে মারধর করেন, শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন এবং পরে শরীরে তেল ও অ্যালকোহল ঢেলে দেন।

দুর্ঘটনার সাজানো: হিন্দুস্তান টাইমসের খবর অনুযায়ী, পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ‘‘তাঁরা গ্যাস রেগুলেটর খুলে একটি লাইটার জ্বালান, যার ফলে দুর্ঘটনাক্রমে আগুন লেগেছে মনে করার পরিস্থিতি তৈরি হয়। সিলিন্ডারটি মৃতার মাথার কাছে রাখা হয়েছিল। প্রায় এক ঘণ্টা পরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং সিলিন্ডারটি ফেটে যায়, যার ফলে পুরো শরীর পুড়ে যায়।’’

রহস্যের উন্মোচন:

নিহতের খুড়তুতো ভাই মৃত্যুর পরিস্থিতি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করার পরই ঘটনার রহস্য উন্মোচিত হতে শুরু করে। সিসিটিভি ফুটেজে আগুন লাগার আগে দুই পুরুষ এবং একজন মহিলাকে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করতে এবং কিছুক্ষণ পরে চলে যেতে দেখা যায়, যা পুলিশকে সঠিক তদন্তের দিকে চালিত করে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy