মরণাপন্ন রোগীর প্রাণ বাঁচাতে দরকার ছিল জটিল নিউরোসার্জারি। কিন্তু বাধা ছিল পরিবারিক আর্থিক অনটন। ঠিক সেই সঙ্কটকালেই দেবদূতের মতো পাশে দাঁড়াল ‘সেবাশ্রয় ২’। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে মস্তিষ্কের জটিল অস্ত্রোপচার করিয়ে নতুন জীবন ফিরে পেলেন দুই প্রবীণ নাগরিক— ৭১ বছরের রবি বিশ্বাস এবং ৭৯ বছরের নিমাই প্রামাণিক।
যমে-মানুষে টানাটানি: ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে পরিচালিত মহেশতলার সেবাশ্রয় ২ শিবিরে অত্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় আনা হয়েছিল এই দুই বৃদ্ধকে।
রবি বিশ্বাস: টানা পাঁচ দিনের অসহ্য মাথাব্যথা নিয়ে এসেছিলেন তিনি। মাথায় রক্তক্ষরণের ফলে তাঁর চেতনা লোপ পেতে শুরু করেছিল।
নিমাই প্রামাণিক: তাঁকে যখন আনা হয়, তিনি সম্পূর্ণ অচেতন। অনর্গল খিঁচুনি হচ্ছিল এবং বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। স্ক্যান রিপোর্টে ধরা পড়েছিল এক ভয়াবহ ব্রেন টিউমার।
দ্রুত পদক্ষেপ ও নিখুঁত চিকিৎসা: পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে মুহূর্তের দেরি না করে তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় জগন্নাথ গুপ্ত ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল জীবনদায়ী নিউরোসার্জারি সম্পন্ন করেন। অস্ত্রোপচার থেকে শুরু করে ওষুধপত্র ও পরবর্তী চিকিৎসা— সবটাই করা হয়েছে সম্পূর্ণ নিখরচায়।
পরিবারে খুশির জোয়ার: একসময় যাঁদের বেঁচে থাকা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল, আজ সেই রবিবাবু ও নিমাইবাবু সুস্থতার পথে। পরিবারের সদস্যরা আপ্লুত হয়ে এই উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সেবাশ্রয় ২ শিবিরের কর্মীরা জানাচ্ছেন, শুধু চিকিৎসা নয়, নিখুঁত পর্যবেক্ষণ ও নিরবচ্ছিন্ন নজরদারির মাধ্যমেই এই অসম্ভবকে সম্ভব করা গিয়েছে।
আজকের দিনে যখন চিকিৎসার খরচ জোগাতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে, তখন ‘সেবাশ্রয়’ হয়ে উঠেছে যন্ত্রণা ও পুনর্জীবনের মাঝখানের একমাত্র আশার আলো।