কলকাতার আহিরীটোলার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে এক শিউরে ওঠার মতো হত্যাকাণ্ড প্রকাশ্যে এল। বকেয়া ভাড়া চাইতে গিয়ে ভাড়াটের হাতে নৃশংসভাবে খুন হলেন খোদ ফ্ল্যাটের মালকিন। খুনের পর প্রমাণ লোপাট করতে দেহ টুকরো টুকরো করে একটি লাল রঙের স্যুটকেসে ভরে রেখেছিল অভিযুক্ত দম্পতি।
ঘটনার প্রেক্ষাপট: বকেয়া ভাড়ার বিবাদ
গাজিয়াবাদের রাজনগর এক্সটেনশনের ‘আউরা চিমেরা সোসাইটি’-তে দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে উমেশ শর্মার। একটিতে তিনি পরিবারসহ থাকেন, অন্যটি ভাড়া দিয়েছিলেন অজয় ও আকৃতি গুপ্তা নামের এক দম্পতিকে। অভিযোগ, গত পাঁচ মাস ধরে ওই দম্পতি কোনো ভাড়া দিচ্ছিল না। বুধবার সন্ধ্যায় বকেয়া টাকা চাইতেই ভাড়াটেদের ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন উমেশ শর্মার স্ত্রী দীপশিখা শর্মা। কিন্তু তারপর আর তিনি ফিরে আসেননি।
সিসিটিভি ফুটেজে রহস্যের সমাধান
রাত পর্যন্ত দীপশিখা না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। সোসাইটির সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে দেখা যায়, রাত ৮টা নাগাদ দীপশিখা অজয়দের ফ্ল্যাটে ঢুকেছিলেন, কিন্তু সেখান থেকে তাঁকে আর বেরোতে দেখা যায়নি। সন্দেহ দানা বাঁধতেই প্রতিবেশী ও পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ওই ফ্ল্যাটে চড়াও হন পরিবারের সদস্যরা।
পালানোর চেষ্টা ও স্যুটকেস রহস্য
পুলিশ ও উত্তেজিত জনতা দরজায় ধাক্কা দিতেই ঘাবড়ে যায় গুপ্তা দম্পতি। অজয় ও আকৃতি পালানোর চেষ্টা করলে প্রতিবেশীরা তাদের ধরে ফেলে। এরপর পুলিশ ফ্ল্যাটের ভেতর তল্লাশি চালাতে গিয়ে একটি বড় লাল স্যুটকেস দেখতে পায়। ব্যাগের চেইন খুলতেই দেখা যায়, দীপশিখার রক্তাক্ত দেহ টুকরো টুকরো করে কাটা অবস্থায় ভেতরে ঠাসা রয়েছে।
পুলিশি পদক্ষেপ ও স্বীকারোক্তি
নন্দীগ্রাম থানার এসিপি উপাসনা পান্ডে জানান, “অভিযুক্ত অজয় ও আকৃতি গুপ্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জেরায় তারা স্বীকার করেছে যে, ভাড়া চাওয়ায় উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর তারা দীপশিখাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। এরপর দেহ টুকরো করে সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা ছিল তাদের।” ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু হয়েছে এবং পুলিশি হেফাজতে নিয়ে পরবর্তী তদন্ত চালানো হচ্ছে।
শহরের একটি অভিজাত আবাসন বা ‘সোসাইটি’-র ভেতর এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড ফের একবার ভাড়াটেদের নথি যাচাই এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিল।