আগামী ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন। কিন্তু ভোটের আগেই অশান্তির আগ্নেয়গিরিতে পরিণত হয়েছে পদ্মাপাড়ের দেশ। ছাত্রনেতা ওসমান হাদির নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে জ্বলছে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম। ভাঙচুর, লুটপাট আর অগ্নিসংযোগের বিভীষিকার মাঝেই দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসন কাটিয়ে বাংলাদেশে পা রাখলেন বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আর ফিরেই জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে এক নতুন বাংলাদেশের রূপরেখা ঘোষণা করলেন তিনি।
মার্টিন লুথার কিং-এর সেই ঐতিহাসিক ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’ বক্তৃতার প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান বলেন, “লুথার কিং-এর একটি স্বপ্ন ছিল, আর আজ বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে আমি বলতে চাই—আই হ্যাভ আ প্ল্যান (আমার একটি পরিকল্পনা আছে)।” তারেক রহমানের এই বার্তা ঘিরে এখন ওপার বাংলার রাজনীতিতে তোলপাড়। তিনি স্পষ্ট করে দেন যে, বাংলাদেশের মানুষ এখন কেবল কথা বলার অধিকার চায় না, তারা চায় যোগ্যতা অনুযায়ী ন্যায্য অধিকার।
এদিন তারেক রহমানের বক্তব্যে বারবার উঠে আসে সামাজিক সংহতির কথা। তিনি বলেন, “এই দেশে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান—সব ধর্মের মানুষ সমান। আমরা এমন এক বাংলাদেশ গড়তে চাই যা একজন মা দেখেন। যেখানে নারী, পুরুষ বা শিশু নির্বিশেষে সবাই নিরাপদে ঘর থেকে বেরিয়ে আবার নিরাপদে ফিরে আসতে পারবে।” দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী এবং পাঁচ কোটির বেশি শিশুর ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করাই তাঁর মূল লক্ষ্য বলে তিনি দাবি করেন।
বিগত ১৫ বছরের শাসনকালকে ‘স্বৈরাচারী’ আখ্যা দিয়ে তারেক রহমান অভিযোগ করেন, শত শত মানুষ গুম ও খুনের শিকার হয়েছেন। ২০২৪-এর ছাত্র আন্দোলনের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, “ওসমান হাদিকে হত্যা করা হয়েছে। এই রক্তের ঋণ যদি শোধ করতে হয়, তবে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তরুণ প্রজন্মই আগামী দিনে দেশকে নেতৃত্ব দেবে।” সহিংসতার পরিবেশের মধ্যেও দলীয় কর্মীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান তিনি। তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন এবং ‘মাস্টারপ্ল্যান’ কি বাংলাদেশের ভাগ্যবদল করতে পারবে? উত্তর লুকিয়ে আছে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারির ব্যালট বক্সে।