ভারত ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বর্তমানে এক নজিরবিহীন সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া নিয়ে শুরু হওয়া ফাটল এখন কার্যত ভাঙনের মুখে। ছাত্রনেতা শরিফ ওসমান হাদি এবং হিন্দু শ্রমিক দীপু চন্দ্র দাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে দুই দেশের রাজপথ এবং দূতাবাস চত্বর এখন রণক্ষেত্র।
১৭ নভেম্বর বাংলাদেশের আদালত শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর থেকেই ঢাকার চাপ বাড়তে থাকে। এর মাঝেই ১৫ ডিসেম্বর ছাত্রনেতা হাসনাত আবদুল্লাহর ‘সেভেন সিস্টার্স’ নিয়ে উস্কানিমূলক মন্তব্য এবং গুলশানে ভারতীয় হাইকমিশন ঘেরাওয়ের চেষ্টায় নয়াদিল্লি কড়া অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি আরও জটিল হয় ১৮ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওসমান হাদির মৃত্যু এবং একই দিনে ময়মনসিংহে দীপু দাসকে পিটিয়ে পুড়িয়ে মারার ঘটনায়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ-সহ একাধিক সংগঠনের বিক্ষোভে দিল্লির বাংলাদেশ দূতাবাস উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
পাল্টা হিসেবে চট্টগ্রাম, শিলিগুড়ি এবং আগরতলায় বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্রগুলোতে ভাঙচুর ও বিক্ষোভের জেরে পরিষেবা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ২৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে মিশনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে, ভারতও বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। দুই দেশের এই পাল্টাপাল্টি হুঁশিয়ারি ও ভিসা বন্ধের সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষ এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।