প্রকৃতির অবিশ্বাস্য দান, নাকি ধ্বংসের পূর্বাভাস? পাকিস্তান অধিকৃত গিলগিট-বালতিস্তানের ডায়মার জেলায় সিন্ধু নদের তীরে এখন কার্যত সোনার খনি। হিমালয়ের বুক চিরে নেমে আসা এই নদের বালিতে মিশে রয়েছে মহার্ঘ্য ধাতু। আগে মানুষ হাতে বালি ছেঁকে সামান্য সোনা পেলেও, গত দু-তিন বছরে আধুনিক যন্ত্রের দাপটে বদলে গিয়েছে দৃশ্যপট। এখন প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ গ্রাম পর্যন্ত সোনা মিলছে সিন্ধুর বালিতে, যা আকাশছোঁয়া মুনাফার মুখ দেখাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, হিমালয় ও তিব্বতের পাহাড়ি শিলা থেকে ক্ষয়ে আসা ‘প্লেসার গোল্ড’ নদীর স্রোতে এসে জমা হয় এই অঞ্চলে। শীতকালে জল কমলে শুরু হয় সোনা উত্তোলনের মহোৎসব। তবে এই কুবেরের ধনের হাতছানি বয়ে আনছে পরিবেশগত বিপর্যয়। শত শত ডিজেল জেনারেটরের ধোঁয়ায় গলতে শুরু করেছে হিমবাহ, বিষিয়ে যাচ্ছে নদীর জল। একদিকে উপজাতিদের বংশপরম্পরার পেশা কেড়ে নিচ্ছে যন্ত্র, অন্যদিকে আইনের ফাঁক গলে অবাধে চলছে প্রকৃতি লুণ্ঠন। সিন্ধুর এই ‘সোনালি জোয়ার’ শেষ পর্যন্ত আশীর্বাদ না অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।