শীতের কুয়াশায় জঙ্গলে চোরাশিকারিদের ছক! বন্যপ্রাণ বাঁচাতে ময়দানে বিশেষ ডগ স্কোয়াড

উত্তরবঙ্গজুড়ে বাড়ছে শীতের দাপট। ভোর থেকে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে জঙ্গল ও রাস্তাঘাট। আর এই প্রাকৃতিক পরিস্থিতিকেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারে চোরাশিকারিরা—এমনই আশঙ্কা করছে বন দফতর। বন্যপ্রাণীদের প্রাণ রক্ষায় এবার নজিরবিহীন তৎপরতা শুরু হলো জলদাপাড়া বন্যপ্রাণী বিভাগে। চোরাশিকারিদের রুখতে সরাসরি ‘স্নিফার ডগ’ বা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর নামিয়ে তল্লাশি অভিযানে নেমেছে বনকর্মীরা।

জলদাপাড়া বন্যপ্রাণী বিভাগের অন্তর্গত চিলাপাতা রেঞ্জের মেন্দাবাড়ি, সাতালি ও নাকাডালা এলাকায় বর্তমানে ব্যাপক রুট মার্চ চালানো হচ্ছে। ঘন জঙ্গল ও বন্যপ্রাণীদের যাতায়াতের করিডোর বা ‘সিসি লাইন’ এলাকায় প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে টহল দিচ্ছেন বনকর্মী ও আধিকারিকরা। জলদাপাড়া বন বিভাগের এডিএফও নবীকান্ত ঝাঁ জানান, “বর্তমানে বন্যপ্রাণী শিকার অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এলেও আমরা কোনো ঝুঁকি নিতে নারাজ। প্রবল ঠান্ডার সুযোগ নিয়ে যাতে কোনো দুষ্কৃতী জঙ্গলে ঢুকতে না পারে, তাই এই বিশেষ তল্লাশি অভিযান।”

অভিযানটি অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে সাজানো হয়েছে। ডিভিশনের নিজস্ব ডগ স্কোয়াড এবং রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর যৌথ সমন্বয়ে চলছে এই রুট মার্চ। শুধু জঙ্গলের ভিতরেই নয়, চিলাপাতা-কোদালবস্তি রোডের চেক পোস্টগুলিতেও বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। বন্যপ্রাণী বা বনজ পণ্যের অবৈধ পাচার রুখতে প্রতিটি যানবাহনে চালানো হচ্ছে ‘নাকা চেকিং’। এই মহড়ায় মোট পাঁচটি রেঞ্জ অংশগ্রহণ করছে—চিলাপাতা, কোদালবস্তি, নীলপাড়া, মাদারিহাট এবং র‍্যাপিড রেসপন্স টিম।

বন দফতর কেবল অভিযানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই; স্থানীয় গ্রামবাসী ও বন-সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যেও সচেতনতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। কোনো অপরিচিত ব্যক্তিকে এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘুরতে দেখলে বা বন্যপ্রাণীর উপস্থিতি লক্ষ্য করলে তৎক্ষণাৎ খবর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং বন্যপ্রাণীদের জন্য নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর জলদাপাড়া বন বিভাগ।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy