দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে চালু হলো কান্দি মহকুমা হাসপাতালের নতুন ভবন। আধুনিক পরিকাঠামো, রোগীবান্ধব পরিষেবা এবং প্রযুক্তিনির্ভর পরিকল্পনায় এই হাসপাতাল এখন বহু বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রকেও টক্কর দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। মুর্শিদাবাদ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ উদ্যোগে এবং মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সন্দীপ সান্যালের তত্ত্বাবধানে গত কয়েক বছরে হাসপাতালটি স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন মডেল হিসেবে তৈরি হয়েছে।
নতুন ভবনের প্রথম ধাপে সুসজ্জিত শিশু বিভাগ চালু হয়েছে, এবং আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই বাকি ফ্লোরগুলিও পরিষেবা শুরু করবে। এই হাসপাতালে মোট ১৫৪টিরও বেশি বেডের সুবিধা রয়েছে।
নতুন ভবনের প্রধান আকর্ষণ:
ডাঃ সান্যালের পরিকল্পনায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ইমার্জেন্সি পরিষেবা এবং শিশু বিভাগের ওপর।
শিশুদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ: হাসপাতালের সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো নতুন পেডিয়াট্রিক বিভাগ। এটি সম্পূর্ণরূপে “বেবি-ফ্রেন্ডলি” ভাবে সাজানো। ৫৪ বেডের বাতানুকূল ওয়ার্ড, সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন, গুরুতর অসুস্থ শিশুদের জন্য ৩টি হাই–কেয়ার বেড, রেডিয়েন্ট ওয়ার্মার, ফোটোথেরাপি ইউনিটের পাশাপাশি শিশুদের জন্য বিজ্ঞানসম্মত খেলনাযুক্ত প্লে কর্নার এবং শিশুদের বই রাখা হয়েছে। শিশুদের মানসিক চাপ কমাতে দেওয়ালগুলি গোপাল ভাঁড়, ননটে-ফন্টের মতো কার্টুন চরিত্রে সাজানো হয়েছে।
রোগীবান্ধব পরিকাঠামো: রোগীদের জন্য রয়েছে প্রশস্ত র্যাম্প, সুসজ্জিত বাগান, রিসেপশন ও কিউ-ম্যানেজার (দ্রুত ভর্তি ও পরিষেবার জন্য), অপেক্ষমান রোগীদের জন্য টিভি ও বসার ঘর।
প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা: ডবল সোর্স পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম, এমার্জেন্সি ট্রায়াজ রুম, ৬ বেডের এমার্জেন্সি অবজার্ভেশন ওয়ার্ড। অক্সিজেন সিলিন্ডারের ওঠা নামানোর সময় টাইলসের ক্ষতি এড়াতে জিম-ম্যাট ফ্লোর টাইলস, লিফট, সিসিটিভি এবং অনলাইন টিকিটিং সিস্টেমের মতো আধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে।
কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার জানান, মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে ১০০ বেডের হাসপাতালের শিলান্যাস করেছিলেন, যা এখন বেড়ে প্রায় ১৫৪ বেড হয়েছে। ২০২৩ সালের শিলান্যাস থেকে ২০২৫-এর এই উদ্বোধন—কান্দি মহকুমা হাসপাতাল এখন সত্যিই “সরকারি হাসপাতালের নতুন মডেল” হিসেবে জেলার গর্ব।