কংগ্রেসের প্রয়াত বর্ষীয়ান নেতা এবং গান্ধী পরিবারের একসময়ের ঘনিষ্ঠ আহমেদ প্যাটেলের পুত্র ফয়জল প্যাটেল এবার দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দাবি তুললেন। বিহার বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির জন্য তিনি সরাসরি রাহুল গান্ধি এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধিকে দায়ী করে তাঁদের দলীয় নেতৃত্বের জায়গা থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত বলে দাবি করেছেন।
ফয়জল প্যাটেল সরাসরি রাহুল এবং প্রিয়াঙ্কাকে অযোগ্য বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং দাবি করেছেন যে দলের নেতৃত্বের ভার শশী থারুর অথবা অন্য কোনও যোগ্য নেতাদের হাতে দেওয়া উচিত।
প্রসঙ্গত, আহমেদ প্যাটেল কংগ্রেসের অন্দরে গান্ধী পরিবারের অন্যতম আস্থাভাজন এবং ঘনিষ্ঠ নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি সোনিয়া গান্ধির রাজনৈতিক পরামর্শদাতা এবং কংগ্রেসের ‘ক্রাইসিস ম্যান’ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০২০ সালে প্রয়াত হওয়ার আগে দীর্ঘদিন তিনি সোনিয়া গান্ধির রাজনৈতিক সচিব হিসেবেও কাজ করেছেন।
বিহার বিপর্যয় ও রাহুলের প্রতিক্রিয়া
সম্প্রতি বিহার নির্বাচনে শতাব্দী প্রাচীন কংগ্রেস দল অন্যতম খারাপ ফল করেছে, তারা মাত্র ৬টি আসনে জয়ী হয়েছে। এই বিপর্যয়ের পরেও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি ভোট প্রক্রিয়ায় কারচুপির দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, যে নির্বাচন শুরু থেকেই স্বচ্ছ ছিল না, সেখানে দল ভালো ফল করতে ব্যর্থ হয়েছে।
তবে রাহুল গান্ধির এই মতের সঙ্গে সহমত হননি ফয়জল। তিনি দাবি করেছেন, বিরোধী শিবিরের উদ্দেশ্য ভেস্তে দেওয়ার জন্য গান্ধী পরিবারের সদস্যদের এবার দলের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত। ফয়জল বিরোধী রাজনীতিতে বিকল্পের প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেছেন।
বিজেপি-তে যোগদানের ইঙ্গিত ও মোদি-শাহের প্রশংসা
ফয়জল খোলাখুলি স্বীকার করেছেন যে তাঁর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহের যোগাযোগ রয়েছে। তিনি বিজেপি-র কর্মসংস্কৃতি এবং তাদের পরিশ্রমী কর্মীদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। আহমেদ প্যাটেলের পুত্র ফয়জল এই মন্তব্যের মাধ্যমে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি খুব দ্রুত বিজেপি-তে যোগ দিতে পারেন।
উল্লেখ্য, গত অগাস্ট মাসেই এক সাক্ষাৎকারে ফয়জলের কণ্ঠে দলীয় নেতৃত্বের প্রতি অসন্তোষ ধরা পড়েছিল। তিনি অভিযোগ করেছিলেন যে দলীয় নেতৃত্ব ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ‘তাঁবেদার নেতা এবং পরামর্শদাতার’ কথাই শোনেন, যা দলের ক্ষতি করছে। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, এই পরামর্শদাতারা রাহুল গান্ধিকে যেভাবে বুঝিয়েছেন, তাতে দলের প্রকৃত বিশ্বস্ত এবং অভিজ্ঞ নেতারা দূরে সরে যাচ্ছেন। ফয়জল তখন থেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের ভূয়সী প্রশংসা করে দাবি করেছিলেন যে দেশ নিরাপদ হাতে রয়েছে।