যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ফুটবল কিংবদন্তি লিওনেল মেসির অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে যে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল, তার রেশ পৌঁছেছে প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গঠিত বিচারপতি অসীম রায়ের তদন্ত কমিটির শোকজের পাল্টা জবাব দিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, ক্রীড়া সচিব রাজেশ কুমার সিনহা এবং বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার মুকেশ কুমার।
সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, কমিটির চিঠির জবাবে ক্রীড়াসচিব রাজেশ কুমার সিনহা কার্যত দায় চাপিয়েছেন আয়োজক সংস্থার ওপরেই। তাঁর বয়ানের মূল নির্যাস:
পরিকল্পনায় বদল: আয়োজক সংস্থা আগে যে নীল নকশা বা প্ল্যান জমা দিয়েছিল, মূল অনুষ্ঠানের সঙ্গে তার আকাশ-পাতাল তফাত ছিল।
আয়োজকদের গাফিলতি: শেষ মুহূর্তে অনুষ্ঠানের সূচি ও ব্যবস্থাপনায় আয়োজক সংস্থা বদল আনায় বিশৃঙ্খলা চরম আকার নেয়।
দায়িত্বের সীমাবদ্ধতা: সচিব স্পষ্ট জানিয়েছেন, অনুষ্ঠানটির সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা এবং আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব সরাসরি ক্রীড়া দফতরের অধীনে ছিল না।
ডিজি রাজীব কুমার এবং বিধাননগরের সিপি মুকেশ কুমার নির্ধারিত ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কমিটির কাছে তাঁদের লিখিত বয়ান জমা দিয়েছেন। তবে তাঁরা ঠিক কী সাফাই দিয়েছেন, তা নিয়ে এখনও কঠোর গোপনীয়তা বজায় রাখা হচ্ছে। পুলিশের নজরদারি এবং ভিড় সামলানোর ক্ষেত্রে কোথায় বড়সড় ফাঁক ছিল, তা নিয়েই মূলত তাঁদের কাছে জানতে চেয়েছিল কমিটি।
ইতিমধ্যেই দর্শকদের ক্ষোভের মুখে পড়ে এবং নৈতিক দায় স্বীকার করে ক্রীড়ামন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অরূপ বিশ্বাস। বর্তমানে সেই দফতর নিজের হাতে নিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্ত্রীর বিদায়ের পর এবার এই তিন শীর্ষ আমলার বয়ান খতিয়ে দেখে কমিটি কী রিপোর্ট দেয়, তার ওপর নির্ভর করছে তাঁদের প্রশাসনিক ভবিষ্যৎ।
তদন্ত কমিটির পরবর্তী পদক্ষেপ এখন একটাই— আউরা চিমেরা সোসাইটির মতো এখানেও কি কোনো পরিকল্পিত গাফিলতি ছিল? নাকি স্রেফ ম্যানেজমেন্টের ব্যর্থতা?