রাজনৈতিক মহলে ফের জল্পনা উসকে দিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যে তিনি বিজেপিতে নরেন্দ্র মোদী এবং তৃণমূলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক আসনে বসিয়ে দলের মধ্যে তাঁদের নিরঙ্কুশ কর্তৃত্বের কথা তুলে ধরলেন।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, “যতদিন মোদী রয়েছেন, ততদিন বিজেপি রয়েছে। ঠিক একইভাবে যতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন, ততদিন কেউ কিছু করতে পারবে না।”
মমতার নামে দল:
মুর্শিদাবাদে বাবরি মসজিদ ইস্যুতে ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ন কবীরের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সাংসদ তাঁর বক্তব্যকে আরও জোরদার করেন। তিনি বলেন, “যতদিন মোদী রয়েছেন, পদ্মফুল ফুটবে। মোদী চলে গেলে, কোথাও কোনো পদ্মফুল ফুটবে না। এরকমই আমাদের মমতাদি। যতদিন মমতাদি রয়েছেন, কেউ কিচ্ছু করতে পারবেন না। দল চলে ওনার নামেই, বাকি কে কী বলল, তাতে কিছুই এসে যায় না।”
এর আগেও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার ঘোষণা করেছেন, “আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তার আগে পরে কিছুই বুঝি না। আমার কাছে নেতা-নেত্রী একজনই।”
নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্বের আবহে মন্তব্য:
শাসকদলের মধ্যে বরাবরই নবীন এবং প্রবীণদের নিয়ে একটি সমান্তরাল রূপরেখা এবং দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ উঠে আসে। একটা সময়ে তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের মধ্যে বয়সের সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। যদিও সেই সময়েই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অভিষেকের জন্মদিনে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমেরিকায় ট্রাম্পের দ্বিতীয়বারের প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রসংশা করেছিলেন, যার মাধ্যমে তিনি বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিলেন রাজনীতিতে বয়সের তেমন কোনো গুরুত্ব নেই। রাজনৈতিক মহলের মতে, প্রবীণ নেতা কল্যাণ যে বরাবরই ‘প্রবীণপন্থী’, তাঁর এই মন্তব্য সেই অবস্থানেই সিলমোহর দিল।
তৃণমূল মুখপাত্র তন্ময় ঘোষ অবশ্য কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যকে সমর্থন করে বলেন, “সত্যিই তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখই তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ। এই নিয়ে বলার অপেক্ষা রাখে না।”
অন্যদিকে, প্রধান বিরোধী দল বিজেপিও এই বক্তব্যের সুযোগ নিয়েছে। বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, “কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতন বেশ কয়েকজন প্রবীণ নেতা রয়েছেন এখনও, যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই রয়েছেন।”