আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনের ঠিক আগে দেশের ক্রমবর্ধমান বায়ু দূষণ পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রের ‘দায়বদ্ধতা ও পরিকল্পনার অভাব’-এর তীব্র সমালোচনা করেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। শুক্রবার একটি ‘এক্স’ (পূর্বে টুইটার) পোস্টে রাহুল গান্ধী অবিলম্বে এই স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা নিয়ে সংসদে বিস্তারিত বিতর্কের দাবি জানিয়েছেন।
রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেন, “আমি যত মায়ের সঙ্গে দেখা করি, তারা সবাই একই কথা বলেন: তাদের সন্তান বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিয়ে বড় হচ্ছে। তারা ক্লান্ত, ভীত এবং ক্ষুব্ধ। মোদীজি, ভারতের শিশুরা আমাদের চোখের সামনে দমবন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আপনি কীভাবে চুপ থাকতে পারেন? আপনার সরকার কেন কোনো তাগিদ, পরিকল্পনা বা দায়বদ্ধতা দেখাচ্ছে না?”
তিনি স্পষ্ট দাবি জানিয়েছেন, “ভারতের বায়ু দূষণ নিয়ে অবিলম্বে সংসদে বিস্তারিত বিতর্ক এবং এই স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা মোকাবিলার জন্য একটি কঠোর, কার্যকর কর্মপরিকল্পনা প্রয়োজন। আমাদের শিশুরা পরিষ্কার বাতাস পাওয়ার যোগ্য – কোনো অজুহাত বা মনোযোগ ঘোরানোর চেষ্টা নয়।”
কেজরিওয়ালের আক্রমণ: এয়ার পিউরিফায়ারে কেন ১৮% জিএসটি?
এদিকে, একই দিনে আম আদমি পার্টির আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরিওয়ালও বায়ু দূষণ নিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার দূষণের সমাধান না দিয়ে উল্টে জনগণের ওপর বোঝা চাপাচ্ছে। কেজরিওয়াল ‘এক্স’-এ লিখেছেন, “পরিষ্কার বাতাস প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার। দিল্লি সহ উত্তর ভারতের বাতাস মারাত্মক হয়ে উঠেছে, এবং সমাধান দেওয়ার পরিবর্তে, সরকার এয়ার পিউরিফায়ারের উপর ১৮ শতাংশ জিএসটি আরোপ করছে। এটা পুরোপুরি অন্যায়।” তিনি অবিলম্বে জিএসটি প্রত্যাহারের দাবি জানান।
দিল্লির বাতাসের মান ‘মারাত্মক’ বিভাগে: সুপ্রিম কোর্টে শুনানি সোমবার
সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের (CPCB) তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল ৮টায়ও দিল্লির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) ছিল ৩৮৪, যা ‘খুব খারাপ’ বিভাগে পড়ে। অশোক নগর (৪১৭), জাহাঙ্গীরপুরী (৪২০) এবং বুরারি ক্রসিং (৪০৩)-এর মতো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় AQI ‘গুরুতর’ বিভাগে রেকর্ড করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার থেকে দিল্লি-এনসিআর-এর বায়ু দূষণ সমস্যাটি সোমবার থেকে নিয়মিতভাবে খতিয়ে দেখতে সম্মত হয়েছে।
কংগ্রেস সূত্রে খবর, ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে চলা শীতকালীন অধিবেশনের কৌশল নির্ধারণের জন্য ৩০ নভেম্বর সন্ধ্যায় সোনিয়া গান্ধীর বাসভবনে সংসদীয় কৌশল গোষ্ঠীর একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকে বায়ু দূষণ ইস্যুটিকে মূল অস্ত্র করার সম্ভাবনা রয়েছে।