কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের স্বস্তি বাড়াতে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিল কর্নাটক সরকার। রাজ্যের সরকারি, আধা সরকারি, চুক্তিবদ্ধ (কন্ট্র্যাকচুয়াল) এবং আউটসোর্সড—সব ধরনের মহিলা কর্মীদের জন্য পিরিয়ড লিভ (Menstrual Leave) দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই নতুন নীতি অনুসারে, প্রত্যেক কর্মরত মহিলাকে মাসে একদিন করে বেতন-সহ ছুটি (Paid Leave) দেওয়া হবে। ফলে একজন মহিলা কর্মী বছরে মোট ১২টি পেড লিভ পাবেন।
ছুটির নিয়মাবলী:
সরকারি নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, ১৮ থেকে ৫২ বছর বয়সি সমস্ত মহিলা কর্মী এই বিশেষ ছুটির সুবিধা পাবেন।
মেডিক্যাল সার্টিফিকেটের প্রয়োজন নেই: এই ছুটি গ্রহণের জন্য কোনো মেডিক্যাল সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না।
ব্যবহারের সময়সীমা: মাসের মধ্যে একবার এই ছুটি নেওয়া যাবে। তবে কেউ যদি কোনো মাসে ছুটি না নেন, তবে সেই ছুটি পরের মাসে নেওয়া যাবে না। পরের মাসের জন্য নতুন করে একটি পিরিয়ড লিভই বরাদ্দ থাকবে।
নথিভুক্তি: এই ছুটি অন্য কোনো ধরনের ছুটির সঙ্গে যুক্ত করা যাবে না। এটিকে আলাদা করে অ্যাটেনডেন্স রেজিস্টার বা লিভ রেজিস্টারে নথিভুক্ত করতে হবে।
সুবিধামতো গ্রহণ: কর্মচারীর সুবিধামতো মাসিক চলাকালীন দিনে ছুটি নেওয়া যাবে, তবে অবশ্যই একই মাসের মধ্যেই ছুটি ব্যবহার করতে হবে।
সরকারের উদ্দেশ্য ও কর্মক্ষেত্র:
সরকার জানিয়েছে, কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য, কর্মদক্ষতা (Efficiency) এবং মানসিক সুস্থতা (Mental Well-being) বাড়াতে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি ছিল। আগের মন্ত্রিসভা এই নীতি অনুমোদন করার পরে শ্রমদফতর নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে।
নির্দেশে বলা হয়েছে, মহিলাদের কাজের সময় স্বস্তি বাড়াতে মাসিকের সময় একদিনের ছুটি বাধ্যতামূলকভাবে দিতে হবে। এই নীতি নিম্নলিখিত আইন অনুযায়ী নথিভুক্ত সব কর্মস্থলে কর্মরত শিল্পক্ষেত্র এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত সমস্ত মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে:
ফ্যাক্টরিস অ্যাক্ট ১৯৪৮
কর্নাটক সোপ অ্যান্ড কমার্শিয়াল এস্টাব্লিশমেন্ট অ্যাক্ট, ১৯৬১
প্ল্যান্টেশন ওয়ার্কার অ্যাক্ট, ১৯৫১
বিড়ি অ্যান্ড সিগার ওয়ার্কারস কন্টিশন অফ এমপ্লয়মেন্ট অ্যাক্ট, ১৯৬৬
মোটর ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স অ্যাক্ট, ১৯৬১।
এই নীতি চালুর পর মহিলা কর্মীদের একাংশ মনে করছেন, কর্মক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে যে দাবি ছিল, তা অবশেষে পূরণ হলো। তাঁদের মতে, এই ছুটি শারীরিক অস্বস্তি এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে।