উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমা সাদা মাছ এবং বাগদা চিংড়ি চাষের জন্য বিশ্ববিখ্যাত। তবে অভিজ্ঞ মৎস্যচাষিদের মতে, শুধু ভালো মানের চারা মাছ ছাড়লেই হবে না, লাভের মুখ দেখতে হলে এই সময় ‘জলকর’ বা পুকুর প্রস্তুত করাটাই আসল চাবিকাঠি।
দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ চাষি আনারুল ইসলাম মন্ডল জানান, শীতকালীন মাছ ধরা হয়ে গেলে জমির সমস্ত জল শুকিয়ে ফেলা বাধ্যতামূলক। এরপর কাদা ও আবর্জনা পরিষ্কার করে পুকুরের তলার মাটি কড়া রোদে শুকাতে দিতে হবে। এতে মাটির গভীরে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও রোগজীবাণু নষ্ট হয়ে যায়। এরপর পরিমাণমতো চুন প্রয়োগ করে মাটির অম্লতা নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, যা বিশেষ করে বাগদা চিংড়ির দ্রুত বৃদ্ধির জন্য সহায়ক।
চুন প্রয়োগের পর নতুন জল ঢোকানোর আগে জলকর বা খাল-বিল ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। অনেক চাষি এখন রাসায়নিকের বদলে জৈব সার ব্যবহার করে প্রাকৃতিক উপায়ে জল প্রস্তুত করছেন। আনারুলবাবুর কথায়, “মাটি ও জল যদি সুস্থ থাকে, তবেই মাছের মড়ক এড়ানো সম্ভব এবং ফলন হবে দ্বিগুণ।” বসিরহাটের এই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিই এখন পথ দেখাচ্ছে রাজ্যের অন্যান্য মৎস্যচাষিদের।