পশ্চিমবঙ্গে নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরির লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের ‘স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন’ (SIR) এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। এনামারেশন ফর্ম জমার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর এবার শুরু হচ্ছে তথ্যের চুলচেরা বিশ্লেষণ। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আগামী শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) থেকেই রাজ্যে ভোটারদের নথিপত্র যাচাইয়ের শুনানি প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে।
কারা ডাক পাচ্ছেন এই শুনানিতে? কমিশন সূত্রে খবর, প্রথম পর্যায়ে প্রায় ৩০ লক্ষেরও বেশি ভোটারকে শুনানির জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছে। মূলত যাঁদের তথ্য ২০০২ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে ‘ম্যাপিং’ করা সম্ভব হয়নি, তাঁদের ‘নো ম্যাপিং’ হিসেবে চিহ্নিত করে তলব করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও ১.৩৬ লক্ষ ভোটারকে ‘সন্দেহজনক’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে কমিশন। এঁদের সকলকেই শনিবার থেকে শুরু হওয়া শুনানিতে হাজির হয়ে নিজেদের ভারতীয় নাগরিকত্ব ও ভোটার হওয়ার স্বপক্ষে প্রমাণ দিতে হবে।
আধার কার্ড কি গ্রহণযোগ্য নয়? এই শুনানির সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর তথ্য হলো— পরিচয়পত্র হিসেবে কেবলমাত্র ‘আধার কার্ড’ প্রামাণ্য নথি হিসেবে গ্রাহ্য হবে না। কমিশন স্পষ্ট জানিয়েছে, শুনানিতে হাজির হওয়ার সময় ভোটারদের বিকল্প নথিপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। গ্রহণযোগ্য নথির তালিকায় রয়েছে:
-
রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের পরিচয়পত্র অথবা পেনশন নথি।
-
১৯৮৭ সালের আগে পোস্ট অফিস, ব্যাঙ্ক, এলআইসি বা স্থানীয় প্রশাসন প্রদত্ত নথি।
-
জন্ম শংসাপত্র, পাসপোর্ট অথবা মাধ্যমিক বা সমতুল্য পরীক্ষার সার্টিফিকেট।
-
রাজ্য সরকার প্রদত্ত বসবাসের শংসাপত্র বা জাতিগত শংসাপত্র।
-
জমি বা বাড়ির দলিল এবং পরিবারের পঞ্জি।
শুনানির বিশেষ নজরদারি: শুনানি প্রক্রিয়া চলাকালীন প্রতিটি নথি বিএলও-দের অ্যাপে আপলোড করা হবে। এরপর জেলা নির্বাচনী আধিকারিক এবং বিশেষ পর্যবেক্ষকরা সেই নথিগুলির সত্যতা যাচাই করবেন। দ্রুত এই প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এর মধ্যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কমিশন। আপনার কাছে নোটিস পৌঁছে থাকলে দেরি না করে সমস্ত প্রামাণ্য নথি গুছিয়ে রাখুন।