বিরোধীদের বিক্ষোভে উত্তাল সংসদ! পাশ হল বিতর্কিত ‘জিরামজি’ বিল, মহাত্মা গান্ধীর নাম সরানোয় রাতভর ধরনায় তৃণমূল

সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের শেষ দিনে বড় চমক দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। বিরোধীদের প্রবল প্রতিবাদ, স্লোগান এবং ওয়াকআউটের মধ্যেই লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাশ হয়ে গেল ‘বিকশিত ভারত গ্যারান্টি ফর রোজগার অ্যান্ড আজীবিকা মিশন’ (VB G-RAM-G) বা সংক্ষেপে জিরামজি বিল। এই বিলটি ২০০৫ সালের ঐতিহাসিক ‘মনরেগা’ (MGNREGA) আইনকে প্রতিস্থাপন করবে।

তৃণমূলের প্রতিবাদ ও রাতভর ধরনা: বিলটি পাশের ধরণ এবং প্রকল্পের নাম থেকে মহাত্মা গান্ধীর নাম বাদ দেওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বিরোধীরা। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা গতকাল রাত ১২টা থেকে আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত সংসদ ভবনের বাইরে সংবিধান সদনের সামনে ১২ ঘণ্টার অবস্থান বিক্ষোভ ও ধরনা দেন। তৃণমূল সাংসদ সাগরিকা ঘোষ এই ঘটনাকে “মহাত্মা গান্ধীর দ্বিতীয় হত্যাকাণ্ড” বলে অভিহিত করেছেন।

কী আছে এই ‘জিরামজি’ বিলে?
সরকারের দাবি, এই নতুন বিল গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে। অন্যদিকে বিরোধীরা একে ‘গরিব-বিরোধী’ বলছেন।

কাজের দিন বৃদ্ধি: এখন থেকে বছরে ১০০ দিনের বদলে ন্যূনতম ১২৫ দিনের কাজের গ্যারান্টি দেওয়া হয়েছে।

নাম বদল: প্রকল্পের নাম থেকে ‘মহাত্মা গান্ধী’ শব্দটি সরিয়ে ‘বিকশিত ভারত’ রাখা হয়েছে।

খরচের বোঝা: আগে অদক্ষ শ্রমিকের মজুরির ১০০ শতাংশ কেন্দ্র দিত। নতুন বিলে কেন্দ্র ও রাজ্যের খরচের অনুপাত হয়েছে ৬০:৪০। ফলে রাজ্যগুলোর ওপর আর্থিক চাপ বাড়বে।

কাজে বিরতি: চাষের মরসুমে বছরে সর্বোচ্চ ৬০ দিন এই প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখা যাবে, যাতে কৃষিকাজে শ্রমিকের অভাব না হয়।

কেন সরব বিরোধীরা?
বিরোধীদের প্রধান অভিযোগ— সরকার আলোচনার সুযোগ না দিয়ে ‘বুলডোজ’ করে বিলটি পাশ করিয়েছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছেন, এই বিলের মাধ্যমে কেন্দ্র রাজ্যগুলোর ওপর দায় চাপিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে চাইছে। তৃণমূলের ব্যানার ও পোস্টারে লেখা ছিল— “Don’t Kill MGNREGA, Like you killed Gandhi”।

অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান সংসদে বলেন, “গান্ধীজির আদর্শকে আমরাই বাস্তবায়িত করছি। কংগ্রেস কেবল ভোটের জন্য তাঁর নাম ব্যবহার করে।”

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy